রাঙ্গুনিয়ায় হামলার পরদিন সোমবার ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
রিজভী প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে বলেন, “যারা প্রাকৃতিক মহাদুর্যোগে নিপতিত উপদ্রুত অসহায় মানুষকে ফেলে নির্বিঘ্নে বিদেশ সফর করতে পারে, তারা সব কিছুই করতে পারে। জনগণ দেখল সরকারি সন্ত্রাস ও গুণ্ডামির অভিনব বেপরোয়া, উদ্ধত্য।
“কারণ রাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তির প্রটেকশন ও উসকানিতে সন্ত্রাসীরা উৎসাহিত হচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের নির্দেশেই এই ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে।”
পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটি যাওয়ার পথে রোববার চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় হামলার মুখে পড়ে বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহর। বিএনপি এজন্য আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদকে দায়ী করেছেন।
বিএনপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন হাছান মাহমুদ। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ফখরুলদের গাড়িবহরে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলেছেন তিনি।
ওই হামলার প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ ডেকেছিল বিএনপি। ঢাকা, নাটোরসহ বিভিন্ন স্থানে ওই বিক্ষোভেও পুলিশ হামলা চালিয়েছে বলে রিজভী অভিযোগ করেন।
“অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতা-কর্মীরা কর্মসূচি পালন করেছে, তারও উত্তর সরকার দিয়েছে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে, উৎপীড়নের মধ্য দিয়ে।”
রোববার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও নেত্রকোনায় স্থানীয় বিএনপির ইফতার মাহফিলেও আওয়ামী লীগকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, “গণবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এক অজানা ভয়ে আওয়ামী লীগের মনস্তাত্বিক আবহাওয়া বদলে গেছে। পতনের আশঙ্কায় তারা উদভ্রান্ত হয়ে গুণ্ডামিতে নেমে পড়েছে। তারা গুণ্ডা রাজত্ব কায়েম করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।”
শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন যে সম্ভবপর নয়, বর্তমান অবস্থাকে তারই প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আবদুস সালাম, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, হাবিবুল ইসলাম বাবুল, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান, মুনির হোসেন, শহীদুল ইসলাম বাবুল।
মহিলা দলের প্রতিবাদ
ফখরুলের গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে মানববন্ধন হয়।
এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন দলের হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
তিনি বলেন, “এই সরকারই শেষ সরকার নয়। যেভাবে আক্রমণ, হামলা, গুম, খুন চালিয়ে যাচ্ছে, তার পরিণতি শুভ হবে না।”
বৃষ্টির মধ্যে এই কর্মসূচিতে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা পিয়ারা মোস্তফা, আমিনা খাতুন, রোকেয়া বেগম তামান্না, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া, রোকেয়া চৌধুরী বেবী উপস্থিত ছিলেন।