রোববার সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অফ অর্ডারে দাঁড়িয়ে হানিফ বলেন, “রমজানে ইফতারের আগে মানুষ আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও শান্তির জন্য দোয়া কামনা করেন। আর খালেদা জিয়া ইফতার সামনে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছেন।… মিথ্যাচার করছেন। কুৎসিত কথাবার্তা বলে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছেন।”
খালেদা জিয়াকে এই আচরণ বন্ধের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে স্বোচ্চার হতে বলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ।
টানা বৃষ্টিতে গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ জেলায় বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস ও ঢলে দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সময় সুইডেনে তিন দিনের সরকারি সফরে থাকায় গত বৃহস্পতিবার এক ইফতার অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া একে ‘আনন্দ ভ্রমণ’ আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, পাহাড় ধসের পরপরই সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উদ্ধার ও পুনর্বাসনের সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
“আমরা দুর্গত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার ও আওয়ামী লীগের পদক্ষেপে সেখানকার জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে।”
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের প্রসঙ্গ টেনে হানিফ বলেন, ভয়াবহ সেই ঘূর্ণিঝড়ের চারদিন পর দুর্গত এলাকায় গিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
“তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে খালেদা জিয়া সে সময় সংসদে বলেছিলেন, ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল- তত মানুষ নাকি মারা যায়নি।
“ওই ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় দুই লাখ মানুষ প্রাণ হারানোর পরও খালেদা জিয়া ওই বক্তব্য দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন যে দেশের জনগনের প্রতি তার কোনো দায়িত্ব নেই। জনগণের প্রতি তার কোনো মায়া-মমতা নেই। সেই খালেদা জিয়া আজ আমাদের ওপর দোষারোপ করতে আসেন।”
প্রধানমন্ত্রীর সুইডেন সফর প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, বাংলাদেশর স্বাধীনতার পর ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দিকেই সুইডেন স্বীকৃতি দিয়েছিল।
“সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন। প্লেজার ট্রিপ কী- তা খালেদা জিয়া জানেন না?
“আসলে তার জানার কথাও নয়। তিনি তো পাকিস্তানি সেনাবহিনীর সঙ্গে ছিলেন। উনি সেই সময় (একাত্তরে) ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানের সেনাদের সাথে প্লেজার ট্রিপে ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে তার জানার কথাও নয়।”
খালেদা জিয়ার ‘দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নেই’ বলেই তিনি ওই ধরনের কথা বলছেন বলে মন্তব্য হানিফের।
“ম্যাডাম খালেদা জিয়ার সমস্ত দেশপ্রেম, আবেগ, অনুভূতি, প্রেম, মহব্বত পাকিস্তানে রয়ে গেছে। যার কারণে তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারেন।”
হানিফ বলেন, “উনি (খালেদা) মানুষ খুনের কথা বলেন। ২০১৫ সালে এ দেশের মানুষেকে পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল- তা মানুষ ভুলে যায়নি। রক্তপিপাসু ডাইনি খালেদা জিয়া ক্ষমতার জন্য মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশের যে কোনো ক্রান্তিকালে জনগণের পাশে ছিলেন মন্তব্য করে হানিফ বলেন, “যতদিন শেখ হাসিনা থাকবে, ততদিন দেশের মানুষ নিরাপদ থাকবে। দেশ নিরাপদ থাকবে। দেশ এগিয়ে যাবে।”