প্রধানমন্ত্রী বুঝেছেন বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হবে না: ফখরুল

বিএনপি ছাড়া যে আগামী নির্বাচন সম্ভব নয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা বুঝতে পেরেই ভোটে অংশ নেওয়ার ডাক দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2017, 03:37 PM
Updated : 17 June 2017, 02:24 PM

সুইডেন সফরে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের জবাবে শুক্রবার রাজধানীতে ইফতারপূর্ব এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, “তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সেখানে গিয়ে বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছেন, খুব আনন্দের কথা। আপনার মুখ থেকে আমাদেরকে অংশগ্রহণের কথা বলা- এটা আগে কখনো শুনিনি, এখন শুনালম।

“এতে কিছুটা আনন্দিত হয়েছি এজন্য যে, তাহলে আপনি বুঝতে পেরেছেন বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হবে না।”

বৃহস্পতিবার সুইডেনের রাজধানী প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক সংবর্ধনা সভায় ২০১৪ সালের নির্বাচনে ‘না আসার ভুল’ থেকে শিক্ষা নিয়ে বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ারও আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা।

৫ জানুয়ারির সেই নির্বাচন বর্জনকে ভুল বলতে নারাজ বিএনপি মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা তো নির্বাচনে যেতে চেয়েছি। আপনারা চাতুরি করে, প্রতারণা করে, জনগণকে বিভ্রান্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনী করলেন। অর্থাৎ কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়ে আবার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আনলেন।”

এর বিরুদ্ধে ওই সময়ের আন্দোলনে ‘জাতীয় পার্টির একটা অংশ ছাড়া’ সব রাজনৈতিক দলসহ আপামর জনসাধারণ অংশ নিয়েছিল বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

এখনো সরকার একতরফা নির্বাচন করতে চাচ্ছে বলে তা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সেজন্য এমন সহায়ক নিরপেক্ষ সরকার আনতে হবে যেটা নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করবে।

“আমরা বলেছি যে, নির্বাচনকালীন সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে। দলীয় সরকার থাকলে কখনোই সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।”

খালেদা জিয়া কিছু দিনের মধ্যে সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন বলে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আওয়ামী লীগের শুভ বুদ্ধি থাকলে সেটা মেনে নিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা ইনক্লুসিভ ইলেকশন, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, সকলের অংশগ্রহণে একটা নির্বাচন করবেন।”

২০১৪ সালে ‘গায়ের জোরে’ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে ক্ষতি করে দেশকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।

“দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এদেশের সর্বোচ্চ আদালত বলছে, দেশে আইনের শাসন নেই, এখানে বিচার বিভাগকেও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। তারা নিম্ন আদালতকে কব্জা করেছে, এখন উচ্চ আদালতকে কব্জা করার চেষ্টা করছে।”

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতেও দলীয়করণ হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “ওইসব সংস্থার প্রধানরা এমনভাবে কথা বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরাও সেভাবে কথা বলে না। যেটা আমরা আগে কখনো দেখিনি।”

রাজধানীর বিজয় নগরে হোটেল ’৭১ এ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনাললিস্ট এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (রুনেসা) উদ্যোগে এই আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল হয়। এই ইফতারে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবীরের পরিচালনায় আলোচনা সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র দল নেতাদের মধ্যে অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান তপন, শাহিন শওকত, মতিউর রহমান মন্টু, আমিনুল ইসলাম, রমেশ দত্ত, জাহাঙ্গীর হোসেন জাহাঙ্গীর, জিয়াউল ইসলাম জিয়া, রোজিনা আখতার ডলি, মিশতাক আহমেদ রাকী, মঞ্জুর কাদের বাবু, ফরহাদ হোসেন নিয়ন, ইউসুফ মোল্লা, মোস্তাফিজুর রহমান মুনির ও ওয়াসিমুল বারী বাবুল বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দলের শতাধিক সাবেক নেতাকর্মী এতে অংশ নেন।