ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনকালীন মুসলিমবিরোধী নানা বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, “তার সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। পৃথিবীর সব মানুষই জানেন তিনি কী করছেন, কী কথা বলছেন।
“আজকে দুর্ভাগ্য আমাদের, সেইখানে আজকে এই ট্রাম্প আজকে প্রায় সভাপতিত্ব (সম্মেলনে) করছেন বলা যায় এবং সেখানে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হয়েছেন।”
রিয়াদে আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলনে শেখ হাসিনার অংশগ্রহণের মধ্যে সোমবার রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে দলের এক সভায় একথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে শেখ হাসিনাসহ আরব ও মুসলিম বিশ্বের ৫৫টি দেশের নেতারা অংশ নেন। এতে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের এক থাকার কথা বলেন তারা।
গত বছর সৌদি আরবের নেতৃত্বে মুসলিম দেশগুলোর গড়ে ওঠা জোটে বাংলাদেশও যোগ দেয়।
এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বিদেশ সফর শুরু করলেন ট্রাম্প।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে ঘোষণা দিয়ে সমর্থন জানিয়েছিলেন
সেই দেশে অবস্থানরত বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তবে বিজয়ী ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
মুসলিম দেশগুলোর এই সম্মেলনে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ‘মজার ব্যাপার’ বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি সৌদি আরবের সঙ্গে সমরাস্ত্র বিক্রির বড় চুক্তিও করেন ট্রাম্প; যার সমালোচনা করেছেন ফখরুল।
“সাড়ে ৭শ বিলিয়নের অস্ত্র সৌদি আরব কিনবে আমেরিকার কাছ থেকে। এক আধ বিলিয়ন নয়, আজ পর্যন্ত যতগুলো ডিল হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ডিল হচ্ছে এটা।”
‘গণতন্ত্রের মুখোশে এক ব্যক্তির শাসন’
বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্রের মুখোশে’ ‘এক ব্যক্তির শাসন’ চলছে বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল।
তিনি বলেন, “দেশে একটা খারাপ সময় চলছে। আমি বলি যে, সবচেয়ে খারাপ সময়।
“কারণ এখানে যারা দেশ শাসন করছে একটা মুখোশ পরে, তারা প্রকৃতপক্ষে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে। শুধু একদলীয় বললে বোধহয় ভুল বলা হবে, এক ব্যক্তির শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে।”
“এখানে মানবাধিকার বলতে কিছু নেই, কাউকে জিজ্ঞাসা করা যায় না। জবাবদিহিতা বলতে কিছু নেই। একটা পার্লামেন্ট আছে নামে মাত্র, যে পার্লামেন্টে বিরোধী দল আছে, যাকে সবাই বলে গৃহপালিত বিরোধী দল,” বলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশিকে ‘গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ’র সঙ্গে তুলনা করে ফখরুল বলেন, “সেজন্য বলেছি, এটা অশনি সংকেত। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, তাকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সরকার এই কাজটি করেছে।”
পুলিশের তল্লাশি অভিযান নিয়ে গণমাধ্যমে আসা সংবাদের জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদও জানান বিএনপি মহাসচিব।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নবগঠিত কমিটির উদ্যোগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ফখরুল।
গত ১৯ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণে হাবিব উন নবী খান সোহেলকে সভাপতি ও কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক এবং উত্তরে এম এ কাইয়ুমকে সভাপতি ও আহসানউল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি অনুমোদন পায়।
নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে ঢাকার মহানগরের নতুন কমিটি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফখরুল।
সভায় সোহেল বলেন, “প্রতিদিন নতুন নতুন ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এগুলোর কোনোটি দেশের মাটিতে এবং কোনোটি বিদেশের মাটিতে হচ্ছে। এসব মোকাবেলা করতে আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ড ও মহল্লায় দলকে সংগঠিত করতে হবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আমাদের রাজপথ ছাড়া কোনো পথ নেই।”
দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিবের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু, আতাউর রহমান ঢালী, রুহুল কবির রিজভী, দক্ষিণের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামসুল হুদা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের নুরুল ইসলাম খান নাসিম, ছাত্র দলের রাজিব আহসান, মহিলা দলের রাজিয়া আলী, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া, নগর নেতা ইউনুস মৃধা, আরিফুর রহমান আরিফ, মো. মোহন, মোশাররফ হোসেন খোকন, আবু মোতালেব, মীর আশরাফ আলী আজম, আবুল হাসান ননি তালুকদার, সাব্বির হোসেন আরিফ, তানভীর আহমেদ রবিন, সাইফুল ইসলাম পটু, রফিকুল ইসলাম রাসেল, সাঈদুর রহমান মিন্টু, আব্দুল হাই পল্লব উপস্থিত ছিলেন।