ফের বদলাচ্ছে খালেদার দুর্নীতি মামলার আদালত

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আবারও আদালত পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2017, 10:50 AM
Updated : 14 May 2017, 11:46 AM

তবে কোন আদালতে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের এ মামলার বিচার হবে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি দুই পক্ষের আইনজীবীরা।

২০১০ সালে দুদকের দায়ের করা এ মামলা বর্তমানে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি পর্যায়ে রয়েছে।  

তার প্রতি অনাস্থা জানিয়ে গত ২৬ এপ্রিল খালেদা জিয়া আদালত পরিবর্তনের যে আবেদন করেছিলেন, তার ওপর শুনানি করে বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার তা মঞ্জুর করে।

আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী ও রাগীব রউফ চৌধুরী। তাদের সঙ্গে ছিলেন জাকির হোসেন ভূঁইয়া। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান।

আদেশের পর খুরশীদ আলম খান বলেন, “আদালত পরিবর্তনের আদেশ দেওয়া হলেও কোন আদালতে এ মামলা যাবে তা আদেশে বলা হয়নি।”

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। তদন্ত শেষে দুদক ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

তার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।

আসামিদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান আছেন দেশের বাইরে।

এছাড়া সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

এ মামলায় আসামির আত্মপক্ষ শুনানি পর্যায়ে খালেদার পুনঃতদন্তের আবেদন আদালত নাকচ করলে গত ২ ফেব্রুয়ারি তিনি বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানান।

খালেদা জিয়ার অনাস্থার আবেদনে ৮ মার্চ হাই কোর্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লাকে (মহানগর দায়রা জজ) মামলাটির বিচারের দায়িত্ব দিয়ে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।

খালেদা জিয়া গত ১৩ এপ্রিল আত্মপক্ষ সমর্থনের নির্ধারিত দিনে জজ আদালতে হাজির হলে তার আইনজীবীরা নতুন বিচারকের প্রতিও অনাস্থা প্রকাশ করেন।

ওই আবেদন নাকচ করে বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা সেদিন বলেন, “এসব কথা আমাকে বলছেন কেন। হাই কোর্টের আদেশে আমি এই মামলার বিচারকের দায়িত্ব পেয়েছি। আপনাদের কথাতেই হাই কোর্ট এই মামলার বিচারের দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে।”

এরপর খালেদার আইনজীবীরা গত ২৬ এপ্রিল আদালত পরিবর্তনের জন্য হাই কোর্টে আবেদন করেন।  

খালেদার আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া সেদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ মামলার এখন যিনি বিচারক, তিনি ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুদকের আইন শাখার পরিচালক ছিলেন। এ মামলার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে তিনি দুদককে মতামত দিয়েছেন। সুতরাং তার কাছে খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন বলে মনে করেন না।”