বিএনপি প্রতিবন্ধী দলে পরিণত হয়েছে: হানিফ

বিএনপি ‘মানসিক বিকারগস্ত ও প্রতিবন্ধী’ রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2017, 09:36 AM
Updated : 21 April 2017, 09:36 AM

ভুটানে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অটিজম বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেওয়া নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে হানিফের এই প্রতিক্রিয়া এল।   

শুক্রবার ধানমণ্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অটিস্টিক শিশুদের অনেকই মেধাবী, উদ্যোগ নেওয়া হলে তারা সমাজে অবদান রাখতে পারে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়েমা ওয়াজেদ পুতুলের উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হলেও বিএনপির ‘গাত্রদাহ’ শুরু হয়েছে।

“আসলে বিএনপি মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে, মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে গেছে। তারা ক্ষমতায় থাকতে দেশের উন্নয়নে অদক্ষতা এবং ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন।”

তিন দিনের ভারত সফরে গত বুধবার থিম্পুতে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারস’ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তার মেয়ে সায়মা হোসেন ওয়াজেদও ওই সম্মেলনে অংশ নেন, যিনি বাংলাদেশের জাতীয় অটিজম বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন।

এর সমালোচনায় বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “দেশের মানুষকে পঙ্গু করে, দেশের রাজনীতিকে প্রতিবন্ধী করে” প্রধানমন্ত্রী অটিজম সম্মেলনে যোগ দিতে ভুটান গিয়েছিলেন।

সিলেট ও সুনামগঞ্জে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকা ঘুরে এসে অভিজ্ঞতা জানাতে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন হানিফ।

বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন তিনি।

“সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপি অব্যাহতভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। পানিবন্দি হাওর এলাকায় তারা সহায়তার বদলে দুর্গত মানুষদের নিয়ে রাজনীতি করছে। এটা দুভার্গজনক, লজ্জার।”

বুধবার প্রেসক্লাবের ওই অনুষ্ঠানে ফখরুল হাওরের বন্যার জন্য সরকারকে দায়ী করে বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় বন্যার সময় তারা বাঁধ খুলে দেয় এবং বাংলাদেশের ওই এলাকা তলিয়ে যায়।

হাওর ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা জানিয়ে হানিফ বলেন, তারা সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও নেত্রকোণার দুর্গত এলাকা দেখে এসেছেন। সেখানে পাহাড়ি ঢলে প্রায় ৮০ শতাংশ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

“আমরা দুর্গত এলাকায় সব রকম সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। পানি বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া চলছে। আগামী সাত দিন যাতে হাওর অঞ্চলে মাছ ধরা না হয় হাওর অঞ্চলের মানুষকে সেই আহ্বান জানিয়েছি।”

দুর্গত এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সহায়তা অব্যাহত রাখার অহ্বান জানিয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এনজিওগুলোকেও আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা আপাতত সেখানে ক্ষুদ্রঋণের সপ্তাহিক কিস্তি আদায় বন্ধ রাখে।

এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, হাওর অঞ্চলে নির্মাণাধীন বাঁধ ভেঙে এবার আকস্মিক বন্যা হয়েছে। ওই নির্মাণ কাজে দুর্নীতির অভিযোগও তারা শুনেছেন।  

“বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে। অনিয়মের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাড় দেওয়া হবে না।”

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহর লাইলী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।