ভয় না দেখিয়ে বিএনপিকে ভোটে আনার চেষ্টা করুন: ফখরুল

ভয় না দেখিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়ার পরিবেশ তৈরির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না বলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।

ফখরুল বলেন, “২০১৪ সালে কী নির্বাচন করেছেন? কোনো বিরোধী দল আপনার নির্বাচনে অংশ নেয় নাই। সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে ও দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় নাই।

“বিএনপিকে কী করে নির্বাচনে আনবেন, সেই চেষ্টা করুন। ওই ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, বিএনপি নির্বাচনে না আসলে তার নিবন্ধন বাতিল হবে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তারা অন্তর্বর্তীকালীন সহায়ক সরকার চাইছে, তবে তাতে আওয়ামী লীগের সাড়াই নেই।

ফখরুল বলেন, “আমরা নির্বাচন চাই। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার কথা আমরা কখনেও চিন্তা করি না। কিন্তু সেই নির্বাচনে যাওয়ার জন্য তো একটা পথ লাগবে।

“আপনি ক্ষমতায় বসে থাকবেন, সমস্ত কল-কবজা নাড়বেন, ইলেকশন ম্যানিপ্যুলেটেড করবেন, আর আমাকে বলবেন তুমি নির্বাচনে যাও, সেটি হবে না। আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, নিরপেক্ষ সরকার অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। অন্যথায় এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।”

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে দলের নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর অন্তর্ধানের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ফখরুল।

সরকারের বিরুদ্ধে গুম-খুনের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “শুধু ইলিয়াস আলী নয়, আমাদের ৫ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে। এই অপরাধ ক্ষমা করার নয়, যারা এই অপরাধের সাথে জড়িত, তারা ক্ষমার যোগ্য নয়।”

বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

“কারওবিরুদ্ধে ১০টা, কারও ১৫টা, কারও ২০টা, কারও ৪০টা, কারও ১০০টা-১৪০টা মামলা আছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টা মামলা। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৮০টার কাছাকাছি মিথ্যা মামলা।”

সরকারবিরোধী আন্দোলন থামানোর কৌশল হিসেবে এভাবে মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন ফখরুল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের রাজনীতিকে ‘প্রতিবন্ধী’ করে রেখেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“প্রধানমন্ত্রী ভুটানে গিয়েছেন প্রতিবন্ধীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন করতে। কিন্তু তার দেশের রাজনীতিকে যে তিনি পুরোপুরি প্রতিবন্ধী করে রেখে দিয়েছেন, মানুষকে সম্পূর্ণভাবে পঙ্গু করে রেখে দিয়েছেন, সেই দিকে তার কোনো খেয়াল নেই।”

দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ভা্ইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিবউন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, শামা ওবায়েদ, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ বক্তব্য রাখেন।

সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শফিউল বারী বাবু, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, মোরতাজুল করীম বাদরু, হেলেন জেরিন খান, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান প্রমুখ।