বিএনপি এলে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে: কাদের

বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলে দেশ-বিদেশে এর বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা দাবি করলে নির্বাচন কমিশন সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2017, 05:27 PM
Updated : 19 April 2017, 05:27 PM

তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নবম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ দাবিতে অনড় থাকলে, তা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বুধবার বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের একথা বলেন।

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায় না। আশা করি, আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। তারা অংশ নিলে দেশে-বিদেশে নির্বাচনের বিশস্ততা ও ইমেজ বাড়বে।”  

বিএনপি নির্বাচনের আগে শর্ত আরোপের সুযোগ পেয়েছে মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা আশা করি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে। তারা যদি বলে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' নাই- এটা নির্বাচন কমিশন অবশ্যই তৈরি করবে।

“তারা শর্ত দিচ্ছে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের। কিন্তু তা সংবিধানের কোথাও নেই।”

নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন হলে তা নির্বাচন কমিশন করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা বিভিন্ন জেলার সাংগঠনিক অবস্থা ও সমস্যা তুলে ধরে কেন্দ্রে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “রিপোর্টে তারা সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। কিছু কিছু জেলা ও উপজেলায় সমস্যা আছে। সেই সব জেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে সমস্যা সমাধান করা হবে।”

“আমাদের দলে কিছু জায়গায় কিছু সমস্যা আছে। আগামী নির্বাচনের আগে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে সুশৃঙ্খল করা হবে নেত্রীর নির্দেশের মাধ্যমে।”

চারটি জেলার নেতাদের আগামী ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৭  এপ্রিল ঢাকায় ডাকা হয়েছে বলে জানান কাদের।

হাওর অঞ্চলে বন্যা নিয়ে বিএনপি ‘ধাপ্পাবাজি’ করছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। ওই অঞ্চলে দুর্গত মানুষের জন্য সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় নেত্রকোণায় দুর্গতদের দেখে আসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, উজান থেকে পানি এসে হাওর এলাকার ১০ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করেছে।

“মানুষ হাহাকার করছে, কোটি কোটি মানুষ দুর্গত হয়েছে।”

তার এই বক্তব্য নাকচ করে কাদের বলেন, “হাওর এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, সরকার কিছু করেনি। তিনি কিছু উদ্ভট কথা বলেছেন।

“গত এক মাস সরকার হাওর এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আর হঠাৎ বিএনপি একদিন হাওর এলাকায় গিয়ে ফটোসেশন করে কৃতিত্ব নিতে চাচ্ছে। আসলে বিএনপি সেখানে ত্রাণ দিতে নয়, ফটোসেশন করতে গিয়েছে।”

তিনি বলেন, “দেশের রাষ্ট্রপতি তিনদিন যাবৎ হাওর এলাকায়, ত্রাণমন্ত্রী এখনো সেখানে অবস্থান করছেন। আগামীকাল মাহবুব-উল-আলম হানিফের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি টিম সেখানে যাবে। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত দলের ও সরকারের কার্যক্রম চলতে থাকবে।”

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল,  ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সাত্তার, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সামসুর নাহার চাপা, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া বেগম, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ূয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল উপস্থিত ছিলেন।