সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণের দাবির প্রতি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সমর্থন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বলেও মন্তব্য করেছেন বাম ছাত্র সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিন বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিক্রিয়া জানায় ছাত্র ইউনিয়ন।
রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে একটি ভাস্কর্য কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপনের পর থেকে তা অপসারণের দাবি তোলে হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন।
মঙ্গলবার হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে একদল আলেম-ওলামার সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ওই ভাস্কর্যটি অপসারণে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
লিটন নন্দী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নির্বাহীর পদে থেকে সংবিধানের মৌল চেতনাকে ধারণ না করে হেফাজতে ইসলামের ভাস্কর্য অপসারণের দাবিকে সমর্থন প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এবং সংবিধানের মৌল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “তিনি কোনোভাবেই প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে এই বক্তব্য প্রদান করতে পারেন না। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদকে স্নাতকোত্তর মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে লিটন নন্দী বলেন, “আমরা মনে করি, কওমি মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তক ও পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন না করে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত জঙ্গিবাদের সহায়ক পরিবেশ তৈরি ও সাম্প্রদায়িক অন্ধকারকে আরও ঘনীভূত করবে।”
“সামগ্রিক বাস্তবতায় বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ধারায় রাষ্ট্রকে পরিচালিত করছে, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না,” বলেন তিনি।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ডাকা এই সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতে পুলিশের অনুমতি না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
লিটন বলেন, “প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর স্বার্থ চরিতার্থ করার পথে না হেঁটে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক সমাজ রাষ্ট্র বিনির্মাণের পথে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাই।”
ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি জিএম জিলানী শুভ, সহ-সভাপতি সুমন সেন গুপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি তুহিন কান্তি দাস, কোষাধ্যক্ষ কাজী রীতা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক রনিয়া সুলতানা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মশিউর সজিব সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।