পদ্মা প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ আটকানোর তৎপরতায় ইউনূসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই দাবি করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলে আসছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পদ হারিয়ে ক্ষুব্ধ ইউনূস তার ঘনিষ্ঠ যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ আটকে দিয়েছিলেন।
ফখরুল বলেন, “ড. ইউনূসকে উনি (প্রধানমন্ত্রী) দোষারোপ করেন। ড. ইউনুস তো আমাদের গর্ব। সারা পৃথিবীজুড়ে তাকে সম্মান দেখানো হচ্ছে।
“আর আপনি ব্যক্তিগতভাবে তাকে শত্রু চিহ্নিত করেছেন। কারণ কী? কারণ হচ্ছে, লোকে বলেন, অনেকেই বলে নোবেল পুরস্কারটা না কি উনার প্রাপ্য ছিল।”
এসময়ে অতিথিরা হাসতে থাকলে ফখরুল বলেন, “হাসবেন না, হাসবেন না। ছিল, উনি মনে করেন তাই। পার্বত্য চট্টগ্রামে ওই যে শান্তি চুক্তি হল না, তথাকথিত শান্তিচুক্তি- এই কারণে উনার না কি এটা প্রাপ্য ছিল। ড. ইউনূস সেই পাতা ভাতের মধ্যে আপনার ছাই দিয়ে দিয়েছে। দ্যাট ওয়াজ হিজ ফল্ট।”
নোবেলজয়ী বাংলাদেশি ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বয়সসীমা অতিক্রমের কারণ দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তাকে ওই পদ থেকে সরানো হয়।
এরপর তিনি আদালতে গিয়ে বিফল হন। বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে তার বাদানুবাদও চলে। ওই সময় বিএনপি ইউনূসের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন।
ফখরুল বলেন, “আপনি (প্রধানমন্ত্রী) তাকেই যত রকমের বেইজ্জতি করা যায়, মামলা-মোকাদ্দমা, এনবি-টেনবিআর সব চালাচ্ছেন। তাতে কি আর ড. ইউনূসকে বন্ধ করে রাখা যাবে? যাবে না। তিনি গোটা পৃথিবীতে ড. ইউনুসই আছেন, সমাদৃত হয়ে চলেছেন।”
অর্থনীতির ছাত্র ফখরুল শান্তিতে নোবেলজয়ী ইউনূসের অর্থনীতিতে ‘মৌলিক অবদানের’ কথা তুলে ধরেন।
“গ্রামীণ ব্যাংক যে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পরিবর্তন করে দিয়েছে, এটা অস্বীকার যে করবে সে তো সত্যকে অস্বীকার করবে। গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে সাথে অন্যান্য এনজিওগুলো আমার গ্রামীণ অর্থনীতিকে বদলে দিয়েছে, যার ভিত্তিকে বাংলাদেশ আজ উঠে দাঁড়াচ্ছে।”
বর্তমানের উন্নয়ন চিত্র নিয়ে সরকারের প্রচারের সঙ্গে ভিন্নমত জানিয়ে অর্থনীতির তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সরকারকে উন্মুক্ত আলোচনার আহ্বান জানান এক সময়ের শিক্ষক ফখরুল।
“আপনারা আপনাদের পরিসংখ্যান ব্যুরোতে যেসব ডাটা দিচ্ছেন, আসুন সেগুলো নিয়ে সামনাসামনি বির্তক করি। দেখবেন যে, সব কিছু শুভঙ্করের ফাঁকি, মানুষকে বোকা বানানোর কাজ চলছে।”
“আমি চ্যালেঞ্জের সঙ্গে বলছি, ব্যবসায়ীদের নিরপেক্ষভাবে জিজ্ঞাসা করুন, তারা ভালো আছে না খারাপ আছেন। রেমিটেন্স নামছে, অলরেডি ১৭% নেমে গেছে। বিদেশি বিনিয়োগ কোথায়? যেগুলো নিচ্ছেন সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট, ঋণের বোঝা আরো বাড়ছে, প্রচণ্ডভাবে বাড়ছে, এই হচ্ছে বর্তমান অর্থনীতির অবস্থা,” বলেন তিনি।