এতিমখানা দুর্নীতি মামলা: তারেককে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2017, 08:35 AM
Updated : 26 Jan 2017, 02:12 PM

খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে হাজির না হওয়ায় ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন বলে দুদকের কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল জানান।

গত নয় বছর ধরে পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা তারেকের বিরুদ্ধে আরও কয়েক ডজন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। মুদ্রা পাচারের এক মামলায় তার সাত বছরের সাজার রায়ও হয়েছে গতবছর।

এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার চলছে বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে। মামলার আসামি সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যাবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ এদিন আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

এদিকে মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াও এদিন আদালতে হাজির হননি। তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সময়ের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করে খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ৩০ জানুয়ারি দিন ঠিক করে দেন।

আইনজীবীদের বিচারক বলেছেন, ওইদিন খালেদা আদালতে হাজির না হলে তার জামিন বাতিল করা হবে।

এছাড়া জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য প্রদানের জন‌্য ২ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছে আদালত।

এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলায় রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। তদন্ত শেষে দুদক ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

তার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।

আসামিদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান আছেন দেশের বাইরে।

এছাড়া সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

দাতব্য ট্রাস্ট মামলা

জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে আসা তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ অগাস্ট তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযুক্ত অপর আসামিরা হলেন- বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তৎকালীন একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরের বছরের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু হয়।

এ মামলায় মোট ৩২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আসামিদের মধ্যে জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।