বঙ্গবন্ধু সেতু আগের নামে ফিরলে কী করবেন: আ. লীগকে রিজভী

পিরোজপুরের ‘জিয়ানগর’ উপজেলার নাম বদলের সিদ্ধান্তকে ‘সরকারের আগ্রাসী প্রতিহিংসা’র বহিঃপ্রকাশ বলেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2017, 11:45 AM
Updated : 10 Jan 2017, 12:19 PM

যে সব স্থাপনার নাম বদলে বঙ্গবন্ধুর নামে করা হয়েছে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সেসবের নাম পরিবর্তনের হুমকিও দিয়েছেন দলটির জ‌্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

‘জিয়ানগর’কে তার আগের নাম ‘ইন্দুরকানী’ ফিরিয়ে দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের পরদিন মঙ্গলবার দলের পক্ষে প্রতিক্রিয়া জানাতে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন রিজভী।   

তিনি বলেন, “গতকাল জিয়ানগর উপজেলার নাম পরিবর্তন করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটি সরকারের আগ্রাসী প্রতিহিংসার আরেকটি শিকারের ঘটনা।

“শুধু রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম থাকার কারণেই এটি সরকারি আক্রমণের শিকার হল। প্রতিহিংসা কত ভয়াবহ রূপ নিলে এই ধরনের সভ্যতা বিবর্জিত আক্রোশমূলক সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার।”

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে ২০০২ সালে ইন্দুরকানির নাম বদলে জিয়াউর রহমানের নামে করা হয়েছিল।

আগের নাম ফেরানোর পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই এলাকার মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রিজভী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন বিভিন্ন দেশে যেসমস্ত বীর সন্তানরা মাতৃভুমির জন্য লড়াই করেছেন, তাদের নামে সড়ক-মহাসড়ক-স্থান-ভবন ইত্যাদির নামকরণ করা হয়। কলকাতায় অনেক রাস্তাঘাটের নাম ইংরেজ সিভিলিয়ানদের নামে ছিল, স্বাধীনতার পর সেটি পরিবর্তন করে সেখানে কীর্তিমান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম দেওয়া হয়েছে।

“শুধু বর্তমান বাংলাদেশ হচ্ছে পৃথিবীর একটি ব্যতিক্রমী দেশ, যেখানে সরকারের দিন-রাত্রি কাটে প্রতিহিংসা-বিদ্বেষ-আক্রোশ আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দমনে।”

সরকারের উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন, “আগামীতে জনগণের শাসন যদি কায়েম হয়, তখন যদি বর্তমান বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববদ্যালয় যার আগের নাম ছিলো পিজি হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম যার আগের নাম ছিল ঢাকা স্টেডিয়াম, বঙ্গবন্ধু সেতু যেটির আগের নাম ছিলো যমুনা সেতু, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার যার আগের নাম ছিলো মওলানা ভাসানী নভো থিয়েটার, এসবের নাম পরিবর্তন করে পূর্বের যে নাম ছিল তা যদি বহাল করা হয়, তখন আপনাদের বক্তব্য কী হবে?”

পঁচাত্তরের পর যে সব সরকার ক্ষমতায় ছিল, তাদের সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলার প্রবণতা ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বিভিন্ন স্থাপনা বঙ্গবন্ধুর নামে করা হয়।  

রিজভী জিয়ানগরের নাম ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, “জিয়ানগর নামটি বাদ দেয়া আমাদের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ ও সকল মুক্তিযোদ্ধাদেরই অপমান করা। কারণ এটি আমাদের দেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের নামে। তিনি এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছেন, বাকশালের অন্ধকার গুহা থেকে যিনি গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছিলেন।”

তিনি জানান, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকার সময় ইন্দুরকানীতে ‘জল-থানা’ প্রতিষ্ঠিত করেন এবং পরবর্তীতে তা পূর্ণাঙ্গ থানায় উন্নীত করেন। জিয়ার ওই অবদানের কারণে ২০০২ সালে খালেদা জিয়ার আমলে এটিকে উপজেলায় উন্নীত করে ‘জিয়ানগর’ নাম দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মালেক, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করিম শাহিন, মুনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।