মিষ্টি নিয়ে সাখাওয়াতের বাসায় আইভী

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে নারায়ণগঞ্জের মেয়র নির্বাচিত হয়ে ‘সবাইকে নিয়ে’ নিয়ে কাজ করার যে প্রতিশ্রুতি সেলিনা হায়াৎ আইভী দিয়েছেন, তার সূচনায় তিনি সবার আগে মিষ্টি হাতে গিয়েছেন পরাজিত প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের বাড়িতে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2016, 05:18 AM
Updated : 23 Dec 2016, 07:25 AM

বৃহস্পতিবার রাতে ভোটের ফল প্রকাশের পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইভী শহরের খানপুর এলাকায় সাখাওয়াতের বাসায় যান। দুই নেতাই এ সময় নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে পারষ্পরিক সহযোগিতার কথা বলেন।   

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আইভী বলেন, “আমি আসছি সৌজন‌্য সাক্ষাতের জন‌্য। আমি কথা দিয়েছিলাম, হারি বা জিতি, আমি আসব। আমি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে এসেছি।”

ভোটের মাঠে পরাজিত হলেও নারায়ণঞ্জের উন্নয়নে মেয়রকে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন সাখাওয়াত, যিনি সাত খুনের মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

“জনগণের জন‌্য আপনি কাজ করবেন। প্রয়োজনে যে সহযোগিতা লাগে আমি তা দেব।”

সাখাওয়াত বলেন, “... মাদকের শহর, সন্ত্রাসের শহর- এই দুর্নাম থেকে যাতে নারায়ণগঞ্জ রক্ষা পায়। সেটা আপনার কাছ থেকে আশা করব।

জবাবে আইভী বলেন, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তিনি নিজে আগে থেকেই সোচ্চার। তার সেই চেষ্টা অব‌্যাহত থাকবে।  

“আশা করি এবার উনাকেও সাথে পাব, উনিও সোচ্চার থাকবেন। মিলেমিশে কাজ করব, নারায়ণগঞ্জের জন‌্য কাজ করব।”

আইভীর বাবা প্রয়াত আলী আহমেদ চুনকা স্বাধীনতার পর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। চিকিৎসক হিসেবে পেশাজীবন শুরুর পরপরই ১৯৯৪ সালে আইভী উচ্চশিক্ষার জন‌্য নিউজিল্যান্ডে চলে যান।

সেখান থেকে ২০০২ সালে ফিরে পরের বছর বিপুল ভোটে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নারী চেয়ারম্যান হন চুনকার মেয়ে। পৌরসভা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন হওয়ার পর ২০১১ সালে দলের নেতাদের মতের বিরুদ্ধে গিয়েই আইভী ভোটে দাঁড়ান এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট শামীম ওসমানকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। 

এবারের নির্বাচনে আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির সাখাওয়াত, তবে তাতে ফল বদলায়নি। বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আইভী পেয়েছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোট। আর সাখাওয়াতের ধানের শীষ পেয়েছে ৯৬ হাজার ৪৪ ভোট।

বৃহস্পতিবার রাতে ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত বলেছিলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও ভোট গণনায় ত্রুটি হয়েছে।”

অন‌্যদিকে আইভী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, “যারা আমার বিজয়ে সহযোগিতা করেছেন তাদের নিয়ে পথ চলতে চাই। একইসঙ্গে উন্নয়নের ধারবাহিকতা রক্ষা করতে চাই।”

এরপর শুক্রবার সাকলেই প্রতিদ্বন্দ্বীর বাসায় হাজির হন গত ১৩ বছর ধরে পৌর চেয়ারম‌্যান ও সিটি মেয়র হিসেবে নগরসেবার দায়িত্ব পালন করে আসা আইভী।

সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক‌্য থাকলেও একই শহরের বাসিন্দা হিসেবে ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ‘সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় না’।

“যেহেতু একই শহরে থাকি, অবশ‌্যই উনার সহযোগিতা আমার লাগবে।... উনার ইশতেহার থেকে প্রস্তাবগুলো নেব, উনার সহযোগিতা নেব। সৌহার্দ‌্যপূর্ণ পরিবেশে থাকার চেষ্টা করব।”