‘দুঃসময়ে’ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে বিএনপি

টানা এক দশক ক্ষমতার বাইরে থাকার মধ‌্যে একদিকে মামলা আর দমন-পীড়নের চাপ, অন‌্যদিকে নতুন কমিটি গঠনের পর নেতাদের টানাপোড়েন; এর মধ‌্যেই ৩৯ বছরে পা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের একটি বিএনপি।   

সুমন মাহমুদ প্রধান রাজনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2016, 04:32 PM
Updated : 1 Sept 2016, 09:55 AM

কঠিন এই সময়ে পহেলা সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দলটি। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা নেতা, কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ‌্যায়ীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া।

১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর এখন বিএনপি সবচেয়ে বড় ‘দুঃসময়’ পার করছে বলে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের কথায় সম্প্রতি উঠে আসে। তবে ‘দমবন্ধ’ পরিস্থিতিতেও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে উঠে দাঁড়ানোর আশা করছেন তিনি।

৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকাল ১০টায় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নতুন কমিটির নেতাদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।

দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যে বিকাল ৩টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা হচ্ছে। এছাড়া সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলোও সভা-সমাবেশ করবে বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।

সেনাপ্রধান হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের মানুষদের এক মঞ্চে এনে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’ গঠ্ন করেন।

১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক ব‌্যর্থ সেনা অভ‌্যুত্থানে রাষ্ট্রপতি জিয়ার মৃত‌্যুর পর দলটির হাল ধরেন তার স্ত্রী খালেদা। এরপর তার ৩৪ বছরের নেতৃত্বে দুই বার ক্ষমতায় যায় বিএনপি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, গৃহবধূ থেকে রাজনীতির কঠিন পথে আসা খালেদাই ‘ক‌্যান্টনমেন্টে জন্ম নেওয়া’ বিএনপির জনভিত্তি তৈরি করে দেন।

তবে তারেক রহমানের রাজনীতিতে পা রাখার পর ছেলের বিষয়ে ‘নমনীয়তা’ খালেদার ‘আপসহীন’ ভাবমূর্তি অনেকটাই ক্ষুণ্ন করেছে বলে বিএনপি বলয়ের মধ্যেই আলোচনা রয়েছে।   

২০০৬-০৭ সালে বিএনপি থেকে ক্ষমতা সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে যাওয়ার পর ‘সংস্কারপন্থি’দের তৎপরতায় ভাঙনের মুখে পড়লেও কারাগার থেকে বেরিয়ে তাতে জোড়া লাগিয়েছিলেন খালেদা।

মামলায় হাজিরা দিতে এখন প্রায়ই খালেদা জিয়াকে হাজির হতে হচ্ছে আদালতে

তারপর ভোটে হেরে সংসদে বিরোধী দলের আসনে থাকলেও ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে এখন রাষ্ট্রীয় সব প্রটোকলই হারিয়েছেন খালেদা; যদিও রাজনীতিতে গুরুত্ব এখনও রয়েছে।  

যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে চাপের মধ‌্যে দশম সংসদ নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনে নেমেছিল বিএনপি। সে চেষ্টা ব‌্যর্থ হওয়ার এক বছর পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে আন্দোলন চালিয়ে আবারও বিফল হয় দলটি।

এরপর মামলা মোকাবেলা করতে করতে নাভিঃশ্বাস বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের। অবস্থা বোঝাতে গিয়ে মহাসচিব ফখরুল বলেন, “আমরা যারা রাজনীতি করি, তারা ধরেই নিয়েছি শেষ জীবনে হয়ত জেলেই কাটাতে হবে। যতগুলো মামলা আছে সে সব মামলায় যদি ৫ থেকে ১০ বছর করে জেল হয়, তাহলে ২৫০ থেকে ২৬০ বছর সাজা হবে।”

আওয়ামী লীগের আট বছরের শাসনে বিএনপির এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী খুন এবং পাঁচশর বেশি নেতা-কর্মী গুমের শিকার হয়েছেন বলেও বিএনপির হিসাব।

এই অবস্থায় প্রকাশ‌্য প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে প্রায় সরে আসা বিএনপি গত মার্চে কাউন্সিলের সাড়ে চার মাস পর ৫ শতাধিক কমিটির বিশাল নতুন কমিটির ঘোষণা দিলেও অবস্থার বদল তো হয়নি; বরং কমিটি নিয়ে অসন্তোষ দাঁনা বেঁধেছে।

আর তার মধ‌্যেই নতুন আরও চ‌্যালেঞ্জ হাজির বিএনপির সামনে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর শেরে বাংলা নগর থেকে সরানোর কথা বলে আসার পর এখন তার স্বাধীনতা পদক ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।

খালেদা জিয়ার মামলাগুলো সচল হওয়ায় তাকে শাস্তি দিয়ে নির্বাচনে অযোগ‌্য করার পাঁয়তারা চলছে বলে বিএনপি নেতারাই মনে করছেন।

দলের দ্বিতীয় শীর্ষনেতা তারেক ইতোমধ‌্যে মুদ্রা পাচার মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা হত‌্যাচেষ্টা মামলার রায়ও ঘনিয়ে আসছে। দলের ‘ভবিষ‌্যৎ কাণ্ডারির’ লন্ডন থেকে ফেরার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না তাকে নিয়ে আশাবাদী কর্মীরাও।

দলের কর্মীদের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি কেঁদে ফেলেছিলেন ফখরুল

বিএনপি নেতাদের ভাষায়, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করার চেষ্টায় রয়েছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পর জেলা, মহানগর, থানা, উপজেলা কমিটির পুনর্গঠনে ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

খবর নিয়ে জানা যায়, সারাদেশে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ দীর্ঘ দিন ধরে। ৭৫টি জেলা কমিটির প্রায় সবকটি তামাদি।

১১টি সহযোগী সংগঠনের সবগুলোরই কমিটি বহু দিনের। কৃষক দলের কমিটি ১৯ বছরের পুরনো। যুবদলের ৮ বছর, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৭ বছর, মহিলা দলের ৫ বছর, মৎস্যজীবী দলের ৬ বছর, উলামা দলের ১২ বছর, ছাত্রদলের ৩ বছর ধরে কমিটি হয় না।

তাহলে কী করে বিএনপি এগুবে- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল শুরুতেই সরকারের ‘হিংসার’ কথা বলেন।

“এমন কোনো নেতা-নেত্রী নেই, যার বিরুদ্ধে মামলা নেই। একেক জনের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৬০-৭০টি থেকে শুরু করে ১৫০-২০০। তারা হয় কারাগারে অথবা এলাকাছাড়া, হুলিয়া নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে এরকম দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও দলের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন, কাজও করছেন।”

দলের স্থায়ী কমিটির সদস‌্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন মনে করেন, জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেকের নামই তাদের রাজনীতির শক্তি।

“শত নিপীড়নের পরও বিএনপিকে উপড়ে ফেলতে পারেনি শাসক দল, মানুষের মনিকোঠা থেকে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নাম মুছে ফেলতে পারেনি, এটাই বাস্তবতা।”

“মাটি ও মানুষের রাজনীতিকে সামনে নিয়ে সময়ের পরিক্রমায় বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। জনগণের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছেন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান।”

“আমি মনে করি, সরকারের চর্তুমুখী দমন-পীড়নের মধ্যেও বিএনপির শেকড় আরও শক্তিশালী হয়েছে, জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে বহু বহুগুণে,” প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আশাবাদ ঝরে মহাসচিবের কণ্ঠে।

বিএনপির শুরু যেভাবে

স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের পটভূমিতে ৭ নভেম্বর ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। পরে তিনি তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে বিএনপি নামে দলটি গঠন করেন।

জিয়াউর রহমানের খাল কাটার সময়কার এই ছবি বেশ আলোচিত

সেনাপ্রধানের পর রাষ্ট্রপতি হয়ে জিয়া প্রথমে তার ঘোষিত ১৯ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠন করেন।

১৯৭৭ সালে গঠিত জাগ দলের আহ্বায়ক হয়েছিলেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। এরপর জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন করে তার সমর্থন নিয়ে জিয়া ওই বছর প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

এরপর ১৯৭৮ সালে জাগ দল, মশিউর রহমান যাদু মিয়া নেতৃত্বাধীন ন্যাপ, আবদুল হালিম-আকবর হোসেন নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস পার্টি, আব্দুল মতিন নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি ও শাহ আজিজুর রহমান মুসলিম লীগকে নিয়ে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

জিয়া এই প্রক্রিয়ায় শাহ আজিজের মতো বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদেরও সঙ্গে নিয়েছিলেন। এর মধ‌্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন‌্যতম সমরনায়ক জিয়া স্বাধীন দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছিলেন বলে সমালোচনা রয়েছে।

জিয়া তার দলে মুসলিম লীগসহ পাকিস্তান রাষ্ট্রে বিশ্বাসী রাজনীতিকদের সঙ্গে চীনপন্থি কমিউনিস্ট নেতা এবং এক দল অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ও এক দল ব্যারিস্টারকেও সম্পৃক্ত করেছিলেন।    

জিয়ার নেতৃত্বে প্রথমে বিএনপির ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে ছিলেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার, মশিউর রহমান যাদু মিয়া, শাহ আজিজুর রহমান, ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, এস এ বারী এটি, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হালিম, জামাল উদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) মাজেদ-উল হক, ক্যাপ্টেন (অব.) নুরুল হক, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত, এম সাইফুর রহমান, মাওলানা আবদুল মতিন, কর্নেল (অব.) আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান, লেফটেন‌্যান্ট কর্নেল (অব.) আকবর হোসেন, আতাউদ্দিন খান প্রমুখ।

সামরিক আইন প্রশাসকের পদে থেকে জিয়ার রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব গ্রহণ নিয়েও সমালোচনা রয়েছে।

১৯৭৯ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়। জিয়া চেয়ারম‌্যান হন, ১১ সদস্যের স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন রাজনীতিতে নবিশ বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

খালেদা জিয়ার সামনে এখন অনেক চ‌্যালেঞ্জ

১৯৮১ সালে জিয়ার মৃত‌্যুর পর বিচারপতি সাত্তার চেয়ারম‌্যানের পদে আসেন, ভাইস চেয়ারম‌্যান হন খালেদা। বছর খানেক পর খালেদা জিয়া চেয়ারম‌্যান হন।

খালেদা চেয়ারম‌্যান হওয়ার পর তাকে প্রথম চ‌্যালেঞ্জ দিয়েছিলেন মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমান। তিনি আলাদা বিএনপি গঠন করেন। কয়েক দশক পরে তিনি আবার বিএনপিতে ফিরেছিলেন।   

এইচ এম এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে খালেদার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানতে হয় বিএনপিকে।

এরপর নির্বাচনে হেরে বিরোধী দলের আসনে বসে বিএনপি। ২০০১ সালের নির্বাচনে আবার বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফেরে বিএনপি।

ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দলীয় চাপের মুখে রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী নতুন দল গঠন করেন। এছাড়া জিয়ার সময় থেকে বিএনপিতে থাকা অলি আহমদ আলাদা দল গড়ে তোলেন।

তারপর জরুরি অবস্থার মধ‌্যে মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূইয়ার নেতৃত্বে বিএনপিতে আবার ভাঙন ধরে। আলাদা কমিটি গঠন হলেও পরে মান্নান ভূইয়াসহ কয়্জেনকে বাদ দিয়ে অন‌্যদের দলে ফিরিয়ে নেন খালেদা।

এরপর ২০০৮ সালে ভোটে অংশ নিয়ে ধানের শীষের ভরাডুবির পর ২০১৪ সালের ভোটই বর্জন করে বিএনপি। ফলে এখন সংসদেও নেই বিএনপি।

গোড়াপত্তন রমনা বটমূলে

বাঙালি সংস্কৃতির অন‌্যতম স্মারক ‘রমনা বটমূলে’ বিএনপির গোড়াপত্তন হয়েছিল বলে জানিয়েছেন দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস‌্য আবুল হাসনাত।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত-সমালোচিত জিয়াউর রহমান

৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৯৭৮ সালে আন্তর্জাতিক শিশু দিবসের অনুষ্ঠান শেষে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শিশু-কিশোরদের নিয়ে পদযাত্রা করে রমনা গ্রিনে বটগাছের নিচে বসে ঠিক করেছিলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠার ভেন্যু হবে রমনা বটমূল।

“ওই পদযাত্রায় আমিও ছিলাম। বটমূলে আমাকে ডেকে প্রেসিডেন্ট বললেন, ‘ব্যারিস্টার হাসনাত, যে দলটি আমরা ১ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করতে যাচ্ছি, তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে এই বটমূলে, এটাই ভেন্যু, সেভাবে আপনি প্রস্ততি নিন।”

কেন এ স্থানটি বেছে নেওয়া হয়েছিলে- তার কারণ জানিয়ে হাসনাত বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ তথা বাঙালিদের প্রাণের অনুষ্ঠান পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয় রমনা বটমূলেই।

“যেহেতু বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে বিএনপির আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে, সেজন্য প্রেসিডেন্ট জিয়া রমনার ঐতিহাসিক বটমূলকে বেছে নিয়েছিলেন। কারণ তিনি বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের রাজনীতি করতে বিএনপি গঠন করেছিলেন।”

ঢাকার প্রথম মেয়র আবুল হাসনাত তৃতীয় জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতীয় পার্টি হয়ে বিএনপিতে ফিরে এখন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় পুরান ঢাকার এই ব‌্যারিস্টার।  

নিজের এক সময়ের দল বিএনপি সম্পর্কে তার মূল্যায়ন- “দলটি বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন সময় অতিক্রম করছে।”