বিএনপির নতুন স্থায়ী কমিটিতে আমীর খসরু-সালাহ উদ্দিন

দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে পুরনো ১৪ জনের সঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমেদকে নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2016, 06:34 AM
Updated : 6 August 2016, 05:25 PM

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এতদিন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

কক্সবাজারের সালাহ উদ্দিন আগের কমিটিতে ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব। গত বছর নাটকীয় অপহরণের পর এখন ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে সে দেশের আদালতে বিচার চলছে তার।

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নতুন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নাম প্রকাশ করেন।

১৯ সদস্যের মধ্যে ১৭ জনের নাম ঘোষণা করেন নতুন মহাসচিব ফখরুল। বাকি দুজনের নাম পরে জানানো হবে বলে জানান ফখরুল, মহাসচিব হওয়ার পর তিনিও স্থায়ী কমিটিতে নতুন।

স্থায়ী কমিটিতে আগের ১৪ জন রয়েছেন। অসুস্থতার কারণে নিষ্ক্রিয় এম শামসুল ইসলাম ও সারোয়ারি রহমানকে স্থায়ী কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

আগের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে আর এ গনি এবং খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মারা যান। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি হয় যুদ্ধাপরাধের দণ্ডে।

চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নতুন স্থায়ী কমিটির প্রথম সদস্য। দ্বিতীয় সদস্য হিসেবে রয়েছেন তার ছেলে লন্ডনে থাকা তারেক রহমান। তিনি দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যানও।

ঘোষিত কমিটিতে ক্রমানুসারে অন্যরা হলেন- খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মইন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমেদ।

ক্রমানুসারে সালাহ উদ্দিন স্থায়ী কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, তার আগের ১৭ ও ১৮ নম্বর সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়নি।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (বাঁয়ে) ও সালাহ উদ্দিন আহমেদ

২০০৯ সালের পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে গঠনতন্ত্র সংশোধন ১৩ সদস্যের স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৯ এ উন্নীত করা হয়।

গত ১৯ মার্চ ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের চার মাস ১৬ দিন পর শনিবার স্থায়ী কমিটির সঙ্গে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের নামও ঘোষণা করা হয়।

শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের ৭৩ জন এবং ৫০২ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ জাতীয় নির্বাহী কমিটির ৪৯৮  জনের নাম জানান ফখরুল। জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে নতুন মুখ ১১৩ জন।

নতুন কমিটি ঘোষণা করে ফখরুল বলেন, “অত্যন্ত ভাইব্রেন্ট একটা কমিটি হয়েছে, ডায়নামিক একটি কমিটি হয়েছে। আমরা মনে করি,  এই কমিটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে এবং দেশের অত্যন্ত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উপযোগী ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।”

কাউন্সিলের ১০ দিন পর মহাসচিব মির্জা ফখরুল, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহার নাম ঘোষণা করা হয়।

এরপর তিন দফায় যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়ে কমিটির ৪২ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস এবং প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল কমিটিতে স্থান পাননি। এই দুজনেরই খালেদা জিয়ার ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। কয়েক মাস আগে মারুফ কামালের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেন তার স্ত্রী।

নতুন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা

সারোয়ারি রহমান, রিয়াজ রহমান, হারুনার রশীদ খান মুন্নু, মুশফিকুর রহমান, এ জে মোহাম্মদ আলী, ফজলুর রহমান পটল, কবির হোসেন, উকিল আবদুস সাত্তার, লুৎফর রহমান খান আজাদ, আখতার হামিদ সিদ্দিকী, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, মশিউর রহমান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কাজী মাজহারুল আনোয়ার, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, প্রকৌশলী আনহ আখতার হোসেইন, অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, জাফরুল হাসান, জয়নুল আবদীন ফারুক, জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), মনিরুল হক চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত মেজর কামরুল ইসলাম, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, ফজলুল হক আসপিয়া (সুনামগঞ্জ), নুরুল হুদা (চাঁদপুর), সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, আবদুল হালিম, এম এ  কাইয়ুম, শহীদুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, ইসমাইল জবিউল্লাহ, অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন সুজাউদ্দিন আহমেদ, আবদুর রশীদ, ব্যারিস্টার হায়দার আলী, ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, অধ্যাপিকা তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপিকা সাহিদা রফিক, অ্যাডভোকেট রেজ্জাক খান, রোজী কবির, গোলাম আকবর খন্দকার, কাজী আসাদ, কবির মুরাদ, অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, একরামুজ্জামান, ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, নাজমুল হক নান্নু, তাহমিনা রুশদীর লুনা (নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী), ড. ইনামুল হক চৌধুরী, ডা. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, সঞ্জীব চৌধুরী, আবদুল হক (সিলেট), অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, অ্যাডভোকেট আফজাল এইচ খান, অ্যাডভোকেট কামরুল মুনির, অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন, অধ্যাপক আবদুল বায়েস ভুঁইয়া, আফরোজা খান রীতা, আবদুস সালাম (ঢাকা মহানগর), মইনুল ইসলাম শান্ত, মো. শাহজাদা মিয়া, এসএস ফজলুল হক, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এম এ লতিফ, ডা. মো. আবদুল কুদ্দুস, সৈয়দ আলমগীর হোসেন এমবিএ ও আমিনুল হক এফসিএ।