‘ভারতে বসে হাসিনা সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র অবিশ্বাস্য’

ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতার সঙ্গে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর বৈঠক নিয়ে সরকার কল্পকাহিনী সাজাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2016, 07:49 PM
Updated : 16 May 2016, 07:49 PM

ভারত সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সুসম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, “সেই ভারতের মাটিতে কী করে বিএনপির একজন লোক বাংলাদেশে তাদের (ভারত) সমর্থিত সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করল?

“এটা বাংলাদেশের মানুষ ও বিশ্ববাসী, কেউ বিশ্বাস করে না। এটা বর্তমান সরকারের একটি চক্রান্ত।”

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলামের সঙ্গে ভারতে লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।

বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কহীন ইহুদি রাষ্ট্রটির রাজনীতিকের সঙ্গে বৈঠক করে আসলাম বাংলাদেশের সরকার হটানোর চক্রান্ত করছিলেন বলে আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেন।

মেন্দির সঙ্গে ছবির সত্যতা স্বীকার করলেও আসলাম দাবি করেন, ‘ব্যক্তিগত’ ওই সফরে তার সঙ্গে অনেকেরই দেখা হয়েছিল। তবে কারও সঙ্গে তার কোনো বৈঠক হয়নি।

এই ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যে রোববার আসলাম গ্রেপ্তার হলে পরদিন সোমবার রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির এক সমাবেশে  বক্তাদের কথায় ঘুরে-ফিরে আসে তার নাম।

রিজভী বলেন, “আজকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের তিনশ মিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে, যেসব কুকীর্তি হয়েছে, তা ঢাকা দেওয়ার জন্য এই মোসাদ কাহিনী তৈরি করা হয়েছে।”

শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “আমরা প্যালেস্টাইনের মুক্তিযুদ্ধ ও তাদের সংগ্রামের সাথে একাত্মতা করে এসেছি। নবী করীম (সা.) বলছেন, এই নাসারা ইহুদিদের বিশ্বাস কর না। আমরা ওদের বিশ্বাস করি না। যে ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে, এটা ওদেরই তৈরি ষড়যন্ত্র।”

যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “তিনি (আসলাম) মিডিয়ার কাছে আগেই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, ব্যক্তিগত সফরে এটা হয়েছে। সেখানে বিএনপিকে সংযুক্ত করা কেন? বিএনপির আমলেই তো প্রথমে বাংলাদেশের মানুষের পাসপোর্টে সিল মারা হয়েছে ‘এক্সসেপ্ট তাইওয়ান এন্ড ইসরায়েল’।”

ফিলিপিন্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ ২০১৪ সালে ওই দেশটিতে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে নৈশভোজ আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেন আলাল।

“ওই সংবাদ প্রকাশের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, জন গোমেজকে প্রত্যাহার করা হল, তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও জন গোমেজ আড়াই বছর ধরে কী করে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত থাকেন, এটা আমরা জিজ্ঞাসা।”

মহিলা দলের সভানেত্রী নুরী আরা সাফা তার জেলা চট্টগ্রামের নেতা আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “আসলাম চৌধুরী কোনো বিদেশিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এভাবে নির্যাতন চলছে বিএনপির বিরুদ্ধে।”

মহিলা নেত্রীর বক্তব্যের সময়ে মঞ্চে থাকা সভার সভাপতি ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন।

মির্জা আব্বাসকে বলতে শোনা যায়, “প্রতিবাদ সমাবেশটি ম্যাডামের। এখানে আসলাম চৌধুরী নিয়ে এত কথা কেন?”

পরে মির্জা আব্বাস মহিলা নেত্রী নুরী আরা সাফাকেও ডেকে বলেন, যাতে আগামীতে এরকম না হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর বিএনপি এই সমাবেশ করেছিল। এতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।