প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্ত্রীদের বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ: বিএনপি

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে জড়িয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ’ হিসেবে দেখছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2016, 07:24 AM
Updated : 6 March 2016, 08:41 AM

দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা ‘চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ, হুমকিমূলক এবং রাজনৈতিক মাস্তানি’।

“এ ধরনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অবৈধ সরকার একদলীয় শাসনের যাত্রাপথে সব সীমানা লঙ্ঘন করল।”

শনিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক আলোচনায় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আপিলের পুনঃশুনানি দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আপিলের শুনানিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দলের কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষ প্রকাশের মধ্য দিয়ে রায়েরই ইঙ্গিত মিলছে।

“এই মামলার রায় কী হবে, তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি, এই মামলায় আর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান বলে গণমাধ্যমের খবর।

এর সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “দুই মন্ত্রী যে বক্তব্য রেখেছেন, তা রাষ্ট্রের একটি স্বতন্ত্র অঙ্গ হিসেবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর নগ্ন হস্তক্ষেপ।... এটি আদালত অবমাননাকর।”

দুই মন্ত্রীর ওই বক্তব্য ‘ফেনীর হাজারী কালচার’ এর বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেন রিজভী।

“প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে তাদের বক্তব্য ধৃষ্টতাপূর্ণ, উসকানিমূলক, দূরভিসন্ধিমূলক,” বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে আবারো প্রমাণ হলো- ১৯৭৫ সালের একদলীয় বাকশাল তার সকল আগ্রাসী শক্তি নিয়ে পুনর্জন্ম লাভ করেছে।

“রাষ্ট্রের সমস্ত অঙ্গের যে সমস্ত পরিচালকরা যখনই স্বাধীন সত্ত্বা নিয়ে কাজ করছেন বা কথা বলছেন, তখন তাদেরকেও সরকারের রোষাণলে পড়তে হয়েছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তার অসংখ্য প্রমাণ আছে।”

সরকারের মন্ত্রীরা আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও স্বতন্ত্র পরিচয় মুছে ফেলে রাষ্ট্রের এসব অঙ্গের উপর ‘আওয়ামী ছাপ’ দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

একদলীয় চেতনায় আইন বিভাগকে সাজানো হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, “এখন শুধু বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে না নিতে পেরে আওয়ামী লীগের নেতারা হুমকি ও ধমকের আশ্রয় নিয়েছে।”

বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি ও এম এ মালেক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।