খালেদা-তারেকের বিপক্ষে প্রার্থীই হননি কেউ

ত্রিশোর্ধ্ব যে কোনো চাঁদাদাতা সদস্যের সুযোগ থাকলেও বিএনপির চেয়ারপারসন ও জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান পদে খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান ছাড়া আর কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2016, 07:00 AM
Updated : 6 March 2016, 01:24 PM

ফলে আসছে কাউন্সিলে শীর্ষ দুটি পদে মা-ছেলের পুনরায় থেকে যাওয়া একরকম নিশ্চিতই হয়ে গেছে।

তবে দলের শীর্ষ দুই পদে এই দুজনের নির্বাচিত হওয়া পুরোপুরি নিশ্চিত এখনি করছেন না বিএনপির ‘চেয়াপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন-২০১৬’র জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম খান।

দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য সাংবাদিকদের বলেন, “তারা মনোনয়নপত্র নিলেন কেবল। এটা তাদের ৪ মার্চ জমা দিতে হবে। এরপর আমরা বাছাই করে দেখব তাদের মনোনয়নপত্র শুদ্ধ আছে কি না?

“কেবল শুদ্ধ থাকলেও হবে না, কারণ ৬ মার্চ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন। যদি কেউ প্রত্যাহার করে ফেলেন, তাকে নির্বাচিত করা যাবে না। কাজেই ৬ তারিখ বিকাল ৪টা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।”

১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের নিহত হওয়ার পর রাজনীতিতে পা রেখেই প্রথমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন ও পরে চেয়ারপারসন পদে আসীন হন খালেদা। তার নেতৃত্বে দুই বার সরকার গঠন করে বিএনপি।

ছেলে তারেক এক যুগ আগে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েই বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব হন। তারপর ২০০৯ সালের কাউন্সিলে জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পদোন্নতি ঘটে তার।

২০০৯ সালের পর আর কাউন্সিল হয়নি বিএনপির। দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর আন্দোলন চালিয়েও সরকারকে হটাতে ব্যর্থ হয়ে সঙ্কটময় অবস্থার মধ্যে কাউন্সিল করতে যাচ্ছে বিএনপি।  

এই মাসে মূল কাউন্সিলের আগে চেয়ারপারসন ও জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারপারসন পদে প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি চেয়ারম্যান ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক স্পিকার মুহাম্মদ জমিরউদ্দিন সরকার তফসিল ঘোষণা করেন।

সে অনুযায়ী বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দেওয়া হয় নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয় থেকে।

সকাল পৌনে ১১টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম খানের কাছ থেকে খালেদা জিয়ার মনোনীত নির্বাচনী এজেন্ট যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

তারেকের পক্ষে তার মনোনীত এজেন্ট আরেক যুগ্মমহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান বিকাল সাড়ে ৩টায় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এজেন্ট হিসেবে শাহজাহান লন্ডনে থাকা তারেক স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রও দেখান।  

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল মান্নান এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্য হারুন আল রশিদকে সঙ্গে নিয়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কার্যালয়ে অবস্থানকারী নজরুল সময়সীমা পার হওয়ার পর সাংবাদিকদের জানান, কেবল দুটি মনোনয়নপত্রই নেওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে।   

“আমরা পুরোটা সময় অপেক্ষা করেছি, আর কেউ মনোনয়নপত্র নেয় কি না? কারণ আমাদের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা ছিল যে, বিএনপি যারা করেন, যারা দলের চাঁদাদাতা সদস্য তাদের মধ্যে যাদের বয়স ৩০ বছরের বেশি, তারা যে কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু আর কেউ মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন নাই।”

এক পৃষ্ঠার এই মনোনয়নপত্রের কোনো মূল্য রাখা হয়নি। ফরমে প্রার্থীর নাম, পিতার নাম ও মাতার নাম, স্থায়ী ঠিকানা, রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয় তথ্যাবলি চাওয়া হয়েছে।

মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক ও সমর্থক হিসেবে স্বাক্ষরদানকারী দুজনকে অবশ্যই কাউন্সিলর এবং দলের চাঁদা পরিশোধকারী হতে হবে। প্রার্থীকেও দলীয় চাঁদা পরিশোধ করতে হবে।

বিএনপি কার্যালয়ের চাঁদা আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা রুস্তম আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,খালেদা ও তারেক দুজনই বার্ষিক চাঁদা পরিশোধ করেছেন।

“ম্যাডাম ও তারেক রহমান সাহেবের বার্ষিক চাঁদা পরিশোধ করা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্যের চাঁদার হার প্রতি মাসে ১০০০ টাকা। সেই অনুযায়ী দুজনের সমুদয় চাঁদার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।”