রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বুধবার বিকালের এই মিলাদ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল ছিল। তবে রাজনৈতিক কোনো নেতাকে এই অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।
মিলাদ অনুষ্ঠানে মঞ্চে আহমেদ কামাল চেয়ারে বসে অংশ নেন। মঞ্চের পেছনে একটি ব্যানার ছিল, তাতে তার বাবা মনছুর রহমান, মা জাহানারা খাতুন, বড় ভাই রেজাউর রহমান, মেজ ভাই জিয়াউর রহমান, সেজ ভাই মিজানুর রহমান, ছোট ভাই খলিলুর রহমান এবং জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ছবি ছিল। আহমেদ কামালের ছবিও ছিল ব্যানারে।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়ার গড়া দলে স্ত্রী খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের সক্রিয়তা দেখা গেলও কখনও দেখা যায়নি তার নিজের পরিবারের সদস্যদের।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি চাপে থাকার মধ্যে আকস্মিকভাবে জিয়ার সর্বকনিষ্ঠ ভাই আহমেদ কামাল এই মিলাদের আয়োজন করলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। অনেকে একে বিএনপি ভাঙার ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবেও দেখে আসছেন।
দোয়ার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আহমেদ কামাল এখনই রাজনীতিতে না আসার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “যদি কোনো দিন রাজনীতিতে আসি, আপনাদের সবাইকে জানিয়ে আসব।”
“বর্তমান সরকার যে গণতন্ত্রের কথা বলছে, এটা গণতন্ত্র নয়। এখন একনায়কতন্ত্র চলছে। এই নাজুক পরিস্থিতিতে দেশের মঙ্গলের জন্য সঠিক ও সুস্থধারার রাজনীতি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”
এই মিলাদ আয়োজনের কারণ ব্যাখ্যা করে আহমেদ কামাল বলেন, “আমি সুস্থ হওয়ার পর থেকে আমার মরহুম পিতা মনছুর রহমান ও মাতা জাহানারা খাতুন ও ভাইদেরসহ পরিবারবর্গের আত্মার মাগফেরাতের জন্য এক দোয়া মাহফিল আয়োজনের তাগিদবোধ থেকে এই মিলাদ। এটা একান্তই আমাদের পারিবারিক মিলাদ মাহফিল।”
“এটা অন্যভাবে না দেখার জন্য’ সবার কাছে অনুরোধও করেন তিনি।
বিকাল সাড়ে ৩টায় মিলাদের আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, আহমেদ কামাল ছাড়া শতাধিক কমবয়েসী মানুষজন চেয়ারে বসে আছেন।
তাদের মধ্যে বিএনপি কিংবা দলটির কোনো সহযোগী সংগঠনগুলোর কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মী ছিল না।
এই মিলাদের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “পত্রিকায় দেখলাম জনাব আহমেদ কামাল সাহেব এধরনের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। তিনি তার ভ্রাতা, আমাদের পার্টির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তার পরিবারবর্গের জন্য দোয়া চাইতে পারেন। এটাতে দোষের কিছু আমরা দেখি না।”
মিলাদ শুরুর আগে মিলনায়তনের নিচে তহুরা মোজাফফর নামে একজনকে চেয়ারে বসা দেখা যায়। নিজেকে জিয়াউর রহমানের খালাত বোন বলে পরিচয় দেন তিনি।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন এস ইসলাম ডন। তিনি আবার খালেদা জিয়ার দূর সম্পর্কের আত্মীয়।
মিলাদ উপলক্ষে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের বাইরে পুলিশ তল্লাশি চৌকি বসায়। ভেতরে-বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাদা পোশাকের সদস্যদেরও ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
দোয়া মাহফিলের পর মিষ্টির প্যাকেট দেওয়া হয়।