জাতীয় সিদ্ধান্ত একা কেন: ওয়ার্কার্স পার্টি

জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জোটের শরিকদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা করা উচিত বলে মনে করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।  

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2015, 03:39 PM
Updated : 18 Sept 2015, 03:52 PM

শুক্রবার দুপুরে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে দলের এক সংবাদ সম্মেলনের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে এ মন্তব্য করেন সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা তো ১৪ দলের অংশ তাই না? আর সরকার ১৪ দলের। বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানোর মতো মৌলিক জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তা অবশ্যই ১৪ দলীয় জোটে আলোচনা হওয়া উচিত ছিল। আর যেটা করা হয়নি, সেটা অনুচিত।”

রাজধানীর তোপখানা রোডে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৯৮ সালের শেষদিকে বাম ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সাতটি দলের সঙ্গে আরও চারটি দল মিলে ১১ দলীয় জোট গঠন করা হয়। ২০০৪ সালের পর এই ১১ দলের সঙ্গে আরও দুটি দলকে টেনে নতুন জোট করে আওয়ামী লীগ।

সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তেল-গ্যাসের দাম কমানোর দাবি জানিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টি বলেছে, “বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ ডলারে নেমে এসেছে। বিশ্বের অনেক দেশই তেলের দাম কমিয়েছে। আমাদের দেশে জ্বালানির দাম কমানো হয়নি।”

দেশের অধিকাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র জ্বালানি তেল নির্ভর হওয়ার পরও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করা হয় দলটির পক্ষ থেকে।

পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের মূল্য না কমানোর হুংকারকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন বাদশা।

গত ২৬ অগাস্ট বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিদ্যুতের দাম গড়ে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং গ্যাসের দাম গড়ে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, যা এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে।

এর প্রতিবাদে বাম দলগুলো শুরু থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। প্রতিবাদ এসেছে শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকেও।

সংবাদ সম্মেলনে ফজলে হোসেন বাদশা অভিযোগ করেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যেই সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় অটোরিকশা ও বাসের ভাড়া বাড়িয়েছে। এই ঘোষণায় সরকার মালিকদের স্বার্থই রক্ষা করেছে, সাধারণ যাত্রীদের কোন স্বার্থই দেখা হয়নি।

বিদ্যুৎ-গ্যাস, অটোরিকশা ও বাসের ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণায় তৈরি ‘সংকট’ থেকে উত্তরণে এ সিদ্ধান্ত সরকারকে পুনঃবিবেচনার দাবিও জানান তিনি।

বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য স্থগিত করার পাশাপাশি বেশ কয়টি দাবি জানিয়েছে দলটি।

অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে শিল্প উৎপাদন, সার ও গণপরিবহনকে অগ্রাধিকার দেওয়া, গৃহস্থালি কাজে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে মিটার ব্যবস্থা প্রচলন, তিনটি স্ল্যাবে বিভক্ত করে গ্যাসের মূল্য পুনর্নির্ধারণ, ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়িতে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা, গৃহস্থালি কাজে ‘লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের’ ব্যবহার বাড়ানো এবং সাশ্রয়ী মূল্যে সরবারহ নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো।

অটোরিকশা ও বাসভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে জনস্বার্থ এবং যাত্রী সাধারণের স্বার্থ রক্ষারও দাবি জানিয়েছে তারা।