সূর্যাস্তের পর কেক কাটলেন খালেদা

প্রথম প্রহরে উদযাপন না করলেও রাতে নিজ হাতে জন্মদিনের কেক কেটেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2015, 04:01 PM
Updated : 15 August 2015, 04:51 PM

শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে গুলশান কার্যালয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের পাশে নিয়ে ৭০ পাউন্ডের একটি কেক ছাড়াও বড় আকারের আরও কয়েকটি কেক কেটে নিজের জন্মদিন উদযাপন করেন তিনি।

বিএনপি নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, শনিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বয়স ৭০ বছর পূর্ণ হল। যদিও তার একাধিক জন্মদিন ও জন্মসালের হদিস পাওয়া যায়।

খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালে বলে তার নতুন করা পাসপোর্টে থাকলেও বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায় গতবছর এক অনুষ্ঠানে বলেন, বিএনপি প্রধানের জন্ম ১৯৪৫ সালে।

বাংলা পিডিয়াসহ খালেদা জিয়ার জীবনীর ওপর রচিত কয়েকটি বইয়েও তার জন্ম বছর ১৯৪৫ সালের ১৫ অগাস্ট দেখানো হয়েছে।

খালেদা জিয়ার বাবা এস্কান্দার মজুমদারের বাড়ি ফেনী হলেও তিনি দিনাজপুরে ঠিকানা নেন। খালেদা জিয়ার জন্মও সেখানে। তার মায়ের নাম তৈয়বা মজুমদার।

১৯৬০ সালের অগাস্ট মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় খালেদার। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর নানা পটপরিবর্তনে জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবাদর্শের দিকে চালিত করার যে চেষ্টা করা হয়, বিতর্কিত জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়ে কার্যত তা-ই উদযাপন করেন খালেদা।

জন্মদিনের কেক কাটার পর মোনাজাতে খালেদা জিয়া।

রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার মধ্যে এবার জাতীয় শোক দিবসের প্রথম প্রহরে বিএনপি নেত্রীর জন্মদিনের কেক কাটা না হলেও রাতে ওই অনুষ্ঠান হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন দলের নেতারা।

রাত ৯টায় খালেদা জিয়া বাসা থেকে গুলশানে নিজের কার্যালয়ে এলে দলের নেতা-কর্মীরা দুই পাশে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে তাদের নেত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়।

এরপর প্রথমে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পাশে নিয়ে ৭০ পাউন্ডের কেকটি কাটেন খালেদা জিয়া। এরপর একে একে বাকি কেকগুলোও কাটেন তিনি।

মহানগর বিএনপি, জাতীয়তাবাদী যুবদল, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নামে কেকগুলো আনা হয়।

এ সময় উপস্থিত নেতারা ‘শুভ শুভ জন্মদিন, ম্যাডামের জন্মদিন’, ‘হ্যাপি বার্থ ডে ম্যাডাম’- বলে দলের চেয়ারপারসনকে শুভেচ্ছা জানান। বাজানো হয় গীতিকার মুনশী ওয়াদুদের লেখা শিল্পী মনির খানের গাওয়া ‘দেশনেত্রীর জন্মদিন, আজ তোমার জন্মদিন’ গানটি।

কেক কাটার এই অনুষ্ঠানে দলের জ্যেষ্ঠ নেতা জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, আবদুল্লাহ আল নোমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, আবদুল মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল হালিম, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, রুহুল আলম চৌধুরী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, মোহাম্মদ শাহজাহান, ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার, আসাদুজ্জামান রিপন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, আনোয়ার হোসাইন, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মুনির হোসেন, নুরী আরা সাফা প্রমুখ।

কক্ষে ভেতরে কেক কাটার অনুষ্ঠানের পর কার্যালয়ের মূল দরজার বাইরে এসে অপেক্ষমাণ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন খালেদা জিয়া।

পরে খালেদা জিয়ার নির্দেশে কেকগুলো এতিমখানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে উপস্থিত কয়েকজন জানিয়েছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্মদিনের কেক কাটার সময় গুলশান কার্যালয়ের সামনের সড়কের মোড়ে পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি ছিল।