পেট্রলের জন্য সংগ্রাম, ‘অসম্ভব পরিস্থিতিতে’ লঙ্কানরা

স্বাধীনতার পর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কায় জ্বালানির যে তীব্র ঘাটতি, তার দ্রুত সমাধানে সরকারের প্রতি দাবি জানাতে রাস্তায় নামছেন দেশটির চিকিৎসক, মেডিকেল কর্মী ও শিক্ষকরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2022, 12:03 PM
Updated : 29 June 2022, 12:03 PM

দ্বীপদেশটিতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, খাদ্য ও ওষুধ ঘাটতিসহ নানামুখী সমস্যা নিয়ে গত মাসে দেশটির নাগরিকদের কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভ ৯ জন নিহত ও প্রায় তিনশত আহত হওয়ার পর আরও তীব্র হয়ে উঠেছিল; যার ফলশ্রুতিতে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বড় ভাই মাহিন্দাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতেও হয়েছে।

পর্যাপ্ত বিদেশি মুদ্রা না থাকায় শ্রীলঙ্কা অন্যান্য অনেক কিছুর পাশাপাশি অতি প্রয়োজনীয় পণ্য জ্বালানিও আমদানি করতে পারছে না।

এখন দেশটির কাছে যে পরিমাণ জ্বালানি আছে তা দিয়ে বড়জোর এক সপ্তাহ সবার চাহিদা মেটানো যাবে; সেজন্য সরকারকে মঙ্গলবার থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন, বাস ও স্বাস্থ্যখাতের মতো জরুরি পরিষেবা বাদে অন্যত্র জ্বালানি সরবরাহে বিধিনিষেধও দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কিন্তু চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য মেডিকেল কর্মীরা বলছেন, জরুরি কর্মী হিসেবে বিবেচিত হওয়া সত্ত্বেও কাজে যাওয়ার জন্য জ্বালানি পেতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে তাদের।

“অসম্ভব পরিস্থিতি, সরকার কোনো সমাধান দিক,” সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন অল আইল্যান্ড নার্সেস ইউনিয়নের সেক্রেটারি এইচ এম মেদিওয়াতা।  

কোভিড-১৯ কারণে পর্যটননির্ভর অর্থনীতিতে ধস এবং বিদেশে থাকা কর্মীদের কাছ থেকে রেমিটেন্সের পরিমাণ কমে যাওয়ায় ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা।

তেলের দাম বৃদ্ধি, কর কমানো এবং গত বছর ৭ মাস রাসায়নিক সার আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে।

জরুরি পরিষেবার কর্মী হিসেবে ‘বিশেষ টোকেন’ পেলেও পেট্রল কিনতে তা কাজে আসছে না বলে অভিযোগ মেদিওয়াতার। 

“পেট্রল পাম্পে থাকা লোকজন আমাদের লইনের সামনে যেতে দেয় না। আমরা সময়মতো শিফট ধরতে পারি না,” বলেছেন তিনি। 

এরই মধ্যে দেশটির জনস্বাস্থ্য পরিদর্শক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা বুধ ও বৃহস্পতিবার ধর্মঘট ডেকেছেন।

সংকট মেটাতে শ্রীলঙ্কার সরকারকে এখন বাইরের সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে।

দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা ভিজেসেকেরা মঙ্গলবার কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও কাতার এনার্জির প্রধান নির্বাহী সাদ শেরিদা আল-কাবির সঙ্গে দেখাও করেছেন। জ্বালানি ঘাটতি মেটানোর লক্ষ্যের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার সরকার এখন কাতার উন্নয়ন তহবিল থেকে ধারও চাইছে।

জ্বালানি বিষয়ক চুক্তি করার চেষ্টায় শ্রীলঙ্কার এক মন্ত্রীর দিনকয়েকের মধ্যে রাশিয়া যাওয়ারও কথা রয়েছে।