কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির ‘পাপে’ সাধারণ মানুষ ভুগবে কেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান শনিবার সেই প্রশ্নও তুলেছেন বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
“আগেও বলেছি, দুদিন ধরে হাওড়ার জনজীবন স্তব্ধ করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। এর পিছনে কিছু রাজনৈতিক দল আছে এবং তারা দাঙ্গা করাতে চায়- কিন্তু এসব বরদাস্ত করা হবে না এবং এ সবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা হবে। পাপ করল বিজেপি, কষ্ট করবে জনগণ?,” এক টুইটে এমনটাই বলেছেন মমতা।
নবীকে নিয়ে বিজেপি নেতা নূপুর শর্মার মন্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার কলকাতার কাছে হাওড়াতে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ পরে সহিংসতায় রূপ নেয়। শনিবার সকালেও জেলাটির পাঁচলা বাজার এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা এএনআই জানায়, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে পাথর ছোড়ার পর তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। কর্তৃপক্ষ বুধবার পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
সমগ্র হাওড়া জেলার ইন্টারনেট পরিষেবা সোমবার পর্যন্ত বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
এর আগে বৃহস্পতিবার হাওড়ার বেশ কয়েকটি এলাকায় বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। মমতা বন্দোপাধ্যায় সেদিন বিক্ষোভকারীদেরকে রাজ্য ছেড়ে দিল্লি গিয়ে আন্দোলন করতে বলেছিলেন।
বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা এবং বহিষ্কৃত নেতা নভিন কুমার জিন্দালের মন্তব্য বহির্বিশ্বে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করা উচিত, সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছিলেন তৃণমূল প্রধান।
বিজেপি নেতাদের মন্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের পর ভারতের অন্তত ৯টি রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিশাল বিশাল বিক্ষোভ হয়।
ঝাড়খণ্ডের রাচিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ জন নিহত ও ৪ পুলিশ সদস্যসহ ডজনখানেক আহত হয়েছে। উত্তর প্রদেশের একাধিক শহরেও সংঘর্ষ হয়েছে, সেখানে গ্রেপ্তার ছাড়িয়েছে দুই শতাধিক।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে।
নবীকে নিয়ে বিজেপির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা নূপুর শর্মা ও নভিন জিন্দালের বিতর্কিত মন্তব্য ভারতের পাশাপাশি অন্য দেশের মুসলমানদেরও ক্রুদ্ধ করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বেশি কয়েকটি দেশ ওই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলেছে, অনেকে ভারতীয় দূতকে তলব করেছে। কোথাও কোথাও ভারতীয় পণ্য বর্জনের আওয়াজও উঠেছে।
ভারতের সরকার এই বিতর্ককে ঠাণ্ডা করতে চেষ্টা করছে; নবী মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে মন্তব্যকে ‘বিচ্ছিন্ন কয়েকজনের দৃষ্টিভঙ্গি’ অ্যাখ্যা দিয়েছে তারা।
ক্ষোভ প্রশমিত করতে বিজেপিও এরই মধ্যে নূপুরের সদস্যপদ স্থগিত এবং নভিনকে বহিষ্কার করেছে। দিল্লিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ায় কানপুরে বিজেপির এক যুবনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।