মিয়ানমারে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী, জান্তাবিরোধীদের বিক্ষোভ

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন মিয়ানমারে নামার পর গার্ড অব অনার ও লাল গালিচা সংবর্ধনা পেলেও তার এই সফর সামরিক জান্তাকে আরও বৈধতা দিতে পারে শঙ্কায় দেশটির বিভিন্ন শহরে অভ্যুত্থানবিরোধীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2022, 10:26 AM
Updated : 7 Jan 2022, 10:26 AM

মিয়ানমারের সেনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে শুক্রবার হুন সেন দুই দিনের সফরে দেশটিতে গেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত প্রশাসনকে উৎখাত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে এটাই প্রথম কোনো সরকারপ্রধানের সফর। 

ওই অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে কয়েক মাস ধরে টানা বিক্ষোভ চলে, যা দমনে ব্যাপক বলপ্রয়োগের পথ বেছে নেয় জান্তা।

দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কূটনৈতিক উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান; কম্বোডিয়া এখন এই জোটের চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছে।

সংকট নিরসনে গত বছরের এপ্রিলে মিয়ানমার ও আসিয়ান ৫ দফা ঐকমত্যে পৌঁছালেও জান্তা সরকার ওই শান্তি পরিকল্পনা কার্যকরে ব্যর্থ হয়েছে বলে ইন্দোনেশিয়াসহ আসিয়ানের বেশ কয়েকটি দেশ তাদের হতাশা প্রকাশ করে আসছে।

এদিকে মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধীরাও হুন সেনের সফরের বিরোধিতা করে বলছেন, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী তার সফরের মাধ্যমে সামরিক জান্তাকে সমর্থন জোগাচ্ছেন।

রাজধানী নেপিডো থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তরের শহর দেপায়িনে বিক্ষোভকারীরা কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর একটি পোস্টার পুড়িয়েছেন। তারা ‘হুন সেন মিয়ানমারে এসো না’ এবং ‘আমরা স্বৈরশাসক হুন সেনকে চাই না’ বলে স্লোগান দেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা পোস্টে দেখা গেছে।

মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় এবং তানিনথারি ও মোনিওয়া অঞ্চলেও বিক্ষোভ হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বুধবার এক ভাষণে হুন সেন মিয়ানমারের সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও শান্তি পরিকল্পনা অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

“মিয়ানমারের ভাইয়েরা, আপনারা কি আপনাদের দেশকে সত্যিকারের গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চান নাকি এ অচলায়নের সমাধান চান?” বলেছিলেন তিনি।

কয়েকদিন আগে হুন সেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইন্দোনেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী জোকো উইদোদো টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় লেখেন, শান্তি পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি না হলে আসিয়ানের বৈঠকে কেবল অরাজনৈতিক প্রতিনিধিদেরই বসতে দেওয়া উচিত।

কিন্তু আসিয়ান বিভক্ত হয়ে পড়তে পারে এই শঙ্কায় গত মাসে হুন সেন আসিয়ানের বৈঠকগুলোতে মিয়ানমারের জান্তা প্রতিনিধিদেরও অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া উচিত বল মন্তব্য করেছিলেন।  

এবারের সফরে হুন সেন মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেও তিনি সু চির সঙ্গে দেখা করবেন না বলে জান্তার এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত রেডিও ফ্রি এশিয়া।