মিয়ানমারে ‘বর্বর’ হামলায় নিহত ৩০ জনকে কবর দিয়েছে বিদ্রোহীরা

মিয়ানমারে এক হামলায় নিহত হওয়ার পর পুড়িয়ে দেওয়া ৩০টিরও বেশি লাশের অবশেষ কবর দেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির  একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2021, 07:48 AM
Updated : 30 Dec 2021, 07:48 AM

২৪ ডিসেম্বর কায়া রাজ্যের মো সো গ্রামের কাছে ওই হামলার জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায় দিয়েছে দেশটির সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা। এই হামলায় তাদের দুই কর্মী নিহত হয়েছে বলে দাতব্য সংস্থা সেইভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এ ঘটনায় জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। অবিলম্বে মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছে তারা।

এ হামলার বিষয়ে জান্তার মুখপাত্র কোনো মন্তব্য না করলেও এর আগে সেনাশাসিত দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সৈন্যরা ওই গ্রামে গুলি ছুড়েছে এবং অজ্ঞাত সংখ্যক ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করেছে।   

মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে যে বেসামরিক বাহিনীগুলো গড়ে উঠেছে তাদের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম কারেননি ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের (কেএনডিএফ) একজন কমাণ্ডার বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে পাওয়া সব মৃতদেহগুলোকে কবর দিয়েছি।”

গণমাধ্যমের পোস্ট করা ছবিগুলোতে দেখা গেছে, কেএনডিএফের সদস্যরা সারিসারি কবরে দেহাবশেষগুলো কবর দিচ্ছেন। লাশগুলোর ওপর ফুল ছিটানো ও কবরের পাশে মোমবাতি জ্বালানো ছিল।

নিরাপত্তার কারণে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কমান্ডার জানান, বুধবার যাদের কবর দেওয়া দেওয়া হয়েছে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হলেও সেইভ দ্য চিলড্রেনের কর্মীরা তাদের মধ্যে ছিলেন বলে বিশ্বাস তার।

সেইভ দ্য চিলড্রেনের এক মুখপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি না হলেও এর আগে গোষ্ঠীটি নিশ্চিত করে জানিয়েছিল, তাদের দুই কর্মী ওই হামলায় নিহত হয়েছেন।

এই হামলার ঘটনায় বিশ্ব সম্প্রদায়ও মর্মাহত প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে। মিয়ানমারের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস হামলাটিকে ‘বর্বোরোচিত’ বলে বর্ণনা করেছে। 

বুধবার প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বলেছে, চার শিশু ও সেইভ দ্য চিলড্রেনের দুই কর্মীসহ অন্তত ৩৫ জনকে হত্যার ঘটনাটির নিন্দা করেছে পরিষদের সদস্য দেশগুলো।

নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে অশান্তি চলছে।

গ্রামাঞ্চলের জঙ্গলে জঙ্গলে জান্তার বিরুদ্ধে লড়তে সংগঠিত হচ্ছে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী, সঙ্গে যোগ দিয়েছে অনেক সাধারণ মানুষও। মাঝে মধ্যেই তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হচ্ছে।

অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাসিস্ট্যান্স অব পলিটিকাল প্রিজনার্সের হিসাব অনুযায়ী, জান্তাবিরোধী আন্দোলন ও সশস্ত্র সংগ্রামে এখন পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৩৭৫ জনের প্রাণ গেছে,কারাবন্দি হয়েছে ১১ হাজারের বেশি।

সামরিক বাহিনী নিহত ও কারাবন্দিদের এ সংখ্যা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে; সংঘর্ষে বিদ্রোহীদের পাশাপাশি অনেক সেনাও মারা পড়ছে বলে দাবি তাদের।