স্কুলগুলো সোমবার থেকে অনলাইনে ক্লাশ নেওয়া শুরু করবে বলে শনিবার জানিয়েছেন তিনি।
আপাতত সরকারি দপ্তরগুলোকে সাত দিনের জন্য বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্মাণ কাজ ১৪ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত চার দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এ মুখ্যমন্ত্রী। এই নির্মাণ কাজের স্থানগুলো থেকেই বাতাসে ধূলা ও দূষণকারী আণুবীক্ষণিক কণা ছড়িয়ে পড়ে।
এক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, ক্ষুব্ধ সর্বোচ্চ আদালত এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকারভিত্তিতে দীর্ঘ মেয়াদি জরুরি পদক্ষেপ নিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লির কাছে দাবি জানানোর কয়েক ঘণ্টা পর কেজরিওয়াল শহরব্যাপী লকডাউনসহ চার ধাপের দূর্ষণ নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হন।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য স্কুলগুলো বন্ধ থাকবে (তারা অনলাইনে ক্লাশ নিতে পারবে), তাই শিশুদের আর দূষিত বাতাসে শ্বাস নিতে হবে না। ১৪ থেকে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে কোনো নির্মাণ কাজের অনুমতি দেওয়া হবে না।
“এক সপ্তাহের জন্য শতভাগ ক্ষমতায় সরকারি দপ্তরগুলোর কাজ বাড়ি থেকে করতে হবে (ডব্লিউএফএইচ) । বেসরকারি দপ্তরগুলোর যতটা সম্ভব ডব্লিউএফএইচ বিকল্পে যাওয়ার জন্য একটি পরামর্শ জারি করা হবে।”
গত সপ্তাহে দীপাবলি উৎসবের পর থেকে দিল্লি ও আশপাশের গুরগাও, নয়ডা ও গাজিয়াবাদে সাত দিনেরও বেশি সময় ধরে দূষিত বায়ুর একটি চাদরে ঢাকা পড়ায় দম বন্ধ আবস্থা বিরাজ করছে।
দিল্লি, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে দীপাবলির আগে, দীপাবলির দিন ও পরে ওই এলাকাগুলোতে হাজার হাজার বাজি পোড়ানো হয়, ফলে ভারতের এই রাজধানীর দূষণের মাত্রা ভয়াবহ খারাপ স্তরে চলে যায়।
সরকারের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৬টায় সামগ্রিকভাবে দিল্লির একিউআই (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা বায়ু মানের সূচক) ছিল ৪২৭।
একিউআই রিডিং ৪০০ বেশিকে ‘গুরুতর’ বা ‘বিপজ্জনক’ বলে বিবেচনা করা হয়।
এই স্তরে দূষিত বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ২.৫ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার (পিএম) ঘনত্ব অনেক বেশি থাকে আর এতে কার্ডিওভাসকুলার এবং ফুসফুস ক্যান্সারের মতো শ্বাসতন্ত্রের রোগ হতে পারে।
পিএম শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে, ওই বাতাসকে বায়ু মানের সূচকে (একিউআই) ‘ভালো’ বলা যায়। ৫১ থেকে ১০০-র মধ্যে থাকলে ‘মোটামুটি গ্রহণযোগ্য’ ধরা হয়।
গাড়ি ও কলকারখানার নিঃসৃত ধোঁয়া, ধুলা ও আবহাওয়ার প্যাটার্ন দিল্লিকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানীতে পরিণত করেছে।
শীতে পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোর কৃষকরা ফসলের নাড়া পোড়ানো শুরু করলে শহরটির বাতাস বিষাক্ত হয়ে ওঠে। দীপাবলির উৎসবও প্রায় একই সময়ে হওয়ায় শহরজুড়ে পোড়ানো আতশবাজিতে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করে।
দিল্লিতে শ্বাস নেওয়া ‘দিনে ২০টি সিগারেট খাওয়ার মতো’ বলে মন্তব্য করেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।