ভারতের কেরালায় বৃষ্টি, ভূমিধসে ২২ মৃত্যু

ভারতের কেরালা রাজ্যের ইদুক্কি ও কোট্টায়াম জেলায় ভারি বৃষ্টির মধ্যে ভূমিধসের ঘটনায় অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও কয়েক ডজন মানুষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2021, 11:52 AM
Updated : 17 Oct 2021, 05:28 PM

মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বহু ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। কোয়াট্টাম জেলায় বাড়িঘর ভেসে গিয়ে ৬ সদস্যের এক পরিবারের সবার মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়াও, ইদুক্কি জেলায় ৮, ৭ এবং ৪ বছরের আরও তিন শিশুর দেহ পাওয়া গেছে ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়া অবস্থায়। সেখানে আরও অন্তত ৫ জন নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজ চলছে।

‘দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া’ জানায়, কোয়াট্টামে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। আর ইদুক্কিতে মারা গেছে মোট ৯ জন। ২ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

মানুষজনকে রবি ও সোমবার প্রভু আয়াপ্পার ভক্তদের সবরিমালা মন্দির পরিদর্শনে না যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

রাতভর প্রবল বৃষ্টির পর রোববার সকালে বৃষ্টির তেজ কিছুটা কমে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। শনিবারের পর নতুন করে কোথাও আর কোনো বন্যা দেখা দেয়নি।

রাজ্যটির কয়েকটি জেলায় রোববার সকাল পর্যন্ত ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিল দেশটির আবহাওয়া দপ্তর।

কেরালার এর্নাকুলাম, ইদুক্কি, ত্রিশুর, কোট্টায়াম, পাথানএনথিডা জেলায় অতি ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে এমন সম্ভাবনায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল। এসব জেলায় ২০ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হতে পারে বলে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল।

এর পাশাপাশি তিরুবানন্তপুরম, কোল্লাম, আলাপুসা, পালাক্কাড, মালাপুরম, কোলিকোডে ওয়াইয়ানাডে অরেঞ্জ অ্যালাট জারি করা হয়েছিল। এসব জেলায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল।

রাজ্যটির আরও দুটি জেলায় ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল। ভারি বৃষ্টিতে কোট্টায়াম ও ইদুক্কির কয়েকটি এলাকায় ভূমিধস হয়েছে।

রাজ্যটির বেশ কয়েকটি বাঁধে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। শনিবার সকালে প্রথম অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করার পর থেকেই নিম্নপ্রবাহের নদীগুলোতে বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়া শুরু হয়েছিল। আশপাশের জেলাগুলোতে ভারি বৃষ্টির বাঁধের আশপাশের এলাকাগুলোর নদী-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে।

জলাশয়ের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় মানিয়ার বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য সরকারের অনুরোধে ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছ। বন্যা কবলিত এলাকায় সেনাবাহিনী তাদের সদস্যদের মোতায়েন করেছে।

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় এয়ার কমান্ড তাদের অধীনস্ত সবগুলো ঘাঁটিকে উচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়ে এমআই-১৭ ও সারাং হেলিকপ্টার প্রস্তুত করে রেখেছে।

কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে কোট্টায়ামে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্ধার অভিযান শুরু করতে দেরি হচ্ছে।

শনিবার সকালে কোট্টায়াম-কুমিলি সড়কের পুল্লুপারা এলাকায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। ভারি বৃষ্টির পর থোডুপুরা শহর পানিতে ডুবে গেছে।

গণমাধ্যমে আসা ফুটেজে কোট্টায়ামের পুঞ্জার এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসকে বুক সমান পানিতে আটকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বাসটি থেকে যাত্রীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কোট্টায়ামের আরেকটি এলাকায় ভেসে যেতে থাকা একটি গাড়িকে কোমড় সমান পানিতে নেমে কিছু লোককে উদ্ধার করতে দেখা গেছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো একটি সতর্কতামূলক নোটে স্থানীয় বাসিন্দাদের অত্যন্ত সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে পর্বত বা নদীর দিকে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।