পশ্চিমবঙ্গসহ তিন সীমান্ত রাজ্যে ‘অধিক ক্ষমতা’ পেল বিএসএফ

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কর্মকর্তারা পাকিস্তান ও বাংলাদেশ লাগোয়া তিন রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও পাঞ্জাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার ভেতর পর্যন্ত তল্লাশি, গ্রেপ্তার ও যে কোনো কিছু জব্দের ক্ষমতা পেয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2021, 10:17 AM
Updated : 14 Oct 2021, 10:17 AM

আগে বিএসএফের এ এখতিয়ার ছিল সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার ভেতর পর্যন্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তের বিভিন্ন অংশে ড্রোনে করে অবৈধ অস্ত্র আসার প্রেক্ষিতে বিএসএফকে এ ‘অধিক ক্ষমতা’ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

তাদের এ পদক্ষেপ ভারতের রাজ্যগুলোর স্বায়ত্তশাসন নিয়ে বিতর্কে ঘি ঢেলেছে, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী এরই মধ্যে পদক্ষেপটির কড়া সমালোচনা করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এনডিটিভি।

“আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে ৫০ কিলোমিটার ভেতর পর্যন্ত বিএসএফকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়ার সরকারি এ একতরফা সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। এটি ফেডারেলিজমের ওপর সরাসরি আঘাত। আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অযৌক্তিক এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিতে আবেদন জানাচ্ছি,” টুইটে বলেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি।

নতুন নির্দেশনায় বিএসএফকে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, পাঞ্জাবের বাইরেও নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মনিপুর, মেঘালয়, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখেও গ্রেপ্তার ও তল্লাশি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, এক্ষেত্রে তাদের এখতিয়ার সীমানার কতটুকু ভেতরে থাকবে তাও বেধে দেওয়া হয়নি।

গুজরাটে বিএসএফের আওতাধীন ছিল সীমান্ত থেকে ৮০ কিলোমিটার ভেতর পর্যন্ত, নতুন নির্দেশনাতে সেটি কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে। রাজস্থানে এ এখতিয়ার ছিল ৫০ কিলোমিটার, সেটি বহাল থাকছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ১০ রাজ্য ও দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবৈধ কর্মকাণ্ড ঠেকাতেই বিএসএফকে ‘অধিক ক্ষমতা’ দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে তাদের এ সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ঝামেলা বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা পর্যবেক্ষকদের।

“পদক্ষেপটি রাজনৈতিকভাবে খুবই সংবেদনশীল। বিএসএফের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সীমান্ত পাহারা দেওয়া এবং অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো দেখাচ্ছে তারা এমনকী সীমান্তরেখাই ঠিকঠাক পাহারা দিতে পারছে না,” বলেছেন ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা।

কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্তে সীমান্তরক্ষীদের তল্লাশি ও কোনো কিছু জব্দের পর তাদের সঙ্গে পুলিশ ও সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের প্রায়ই ‘ঝামেলা বেধে যেতে পারে’, বলছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, “তাদের এখতিয়ার হচ্ছে সীমান্ত চৌকির আশপাশ; কিন্তু নতুন ক্ষমতাবলে তারা এখন কিছু রাজ্যের ভেতরেও কার্যক্রম চালানোর এখতিয়ার পেল।”

বিএসএফের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলছেন অন্য কথা।

“আমাদের কাছে যদি কোনো ঘটনার বিষয়ে তথ্য আসে, তাহলে আমাদের আর স্থানীয় পুলিশের জন্য অপেক্ষা করা লাগবে না, আমরা সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবো,” বলেছেন তিনি।