ভারতে দুর্গম এলাকায় টিকা পৌঁছে দিচ্ছে ড্রোন

টিকাদানে গতি আনতে ভারতে বাণিজ্যিক ড্রোনে করে কোভিড-১৯ টিকা সরবরাহ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির ঊর্ধ্বতন এক সরকারি বিজ্ঞানী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2021, 08:20 AM
Updated : 7 Oct 2021, 08:42 AM

ড. সামিরন পান্ডা বিবিসিকে বলেছেন, মূলত উত্তরপূর্বের পাহাড়ি রাজ্যগুলোতে টিকা পৌঁছাতে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভারত টিকা নেওয়ার উপযুক্ত সকল নাগরিককে ২০২১ সালের মধ্যে কোভিড টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করলেও ধারাবাহিকভাবে গতি না বাড়ালে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটির নাগরিকদের এখন পর্যন্ত অনুমোদিত তিনটি টিকার ৯২ কোটির বেশি ডোজ দেওয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে টিকা নেওয়ার উপযুক্তদের প্রায় ৭০ শতাংশ অন্তত প্রথম ডোজ পেয়ে গেছেন বলে দেখাচ্ছে সরকারি হিসাব।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি কোভিড রোগী; প্রাণ গেছে ৪ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষের।

সোমবার দেশটি পরীক্ষামূলকভাবে উত্তরপূর্বের রাজ্য মনিপুরে প্রথম ড্রোনে করে টিকা সরবরাহ করে।

একটি ড্রোন ১০ ডোজ টিকা নিয়ে বিষ্ণুপুর থেকে কারাং দ্বীপের একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকে উড়ে যায়, সময় লাগে মাত্র ১২ মিনিট।

ছবি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ/বিবিসি থেকে নেওয়া

কারাংয়ে সাড়ে তিন হাজার লোকের বাস; নৌকা বা বাসে দ্বীপটিতে যেতে অন্তত ৪ ঘণ্টা লাগত।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের শীর্ষ বিজ্ঞানী ও মহামারীবিদ্যা বিভাগের প্রধান ড. পান্ডা জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোনের ব্যবহার সফল হয়েছে, দ্বীপটির ১০ জন টিকা পেয়েছেন।

মনিপুর ও নাগাল্যান্ডের মতো রাজ্যগুলোতে দূর-দূরান্তের গ্রামে এখন এভাবেই টিকা পাঠানোর সম্ভাবনা বেশি; রাজ্যগুলোর কোনো কোনো গ্রামে পাহাড়ি রাস্তা ও স্রোত পেরিয়ে যেতে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে, বলেছেন তিনি।

আন্দামান ও নিকোবরে টিকা পাঠাতেও ড্রোন ব্যবহার করা হবে। নৌকা করে এই দ্বীপপুঞ্জে যেতেও দীর্ঘ সময় লাগে।

“আমরা চেষ্টা করছি যেন কম লোকজন আছে এমন দুর্গম অঞ্চলে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা না দেয়, এজন্য সেসব এলাকার বাসিন্দাদেরকে আগেভাগেই টিকা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। যদি সেসব এলাকার লোকজন আক্রান্ত হয় ও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে তারা ভেন্টিলেটর, নিবিড় পরিচর্যা, অক্সিজেন পাবে না,” বলেছেন পান্ডা।

ভারতের সরকার টিকা সরবরাহে এখন যে ড্রোনগুলো ব্যবহার করছে সেগুলো সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ কেজি ওজন বা ৯০০ ডোজ টিকা বহন করতে পারে, টিকা নিয়ে উড়ে যেতে পারে অন্তত ৭০ কিলোমিটার।