আফগানিস্তানে ‘নারীদের মধ্যে অবিশ্বাস্য আতঙ্ক’

নারীদের ব্যাপারে তালেবানের অবস্থানে স্বচ্ছতার ঘাটতি আফগানিস্তানজুড়ে ‘অবিশ্বাস্য আতঙ্কের’ সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অ্যালিসন ডাভিডিয়ান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2021, 10:04 AM
Updated : 9 Sept 2021, 10:05 AM

বুধবার নিউ ইয়র্কের সাংবাদিকদের সঙ্গে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের নারী বিষয়ক এ উপপ্রধান সতর্ক করে বলেছেন, কট্টরপন্থি ইসলামী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে যাওয়া দেশটিতে এখন প্রতিদিনই নারী অধিকার খর্বের খবর মিলছে।

অনেক নারীকে পুরুষ আত্মীয় ছাড়া ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না; কিছু কিছু প্রদেশে নারীদেরকে কাজ বন্ধে বাধ্য করা হয়েছে, সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা নারীরা সুরক্ষা কেন্দ্রগুলো লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়েছে, অধিকার কর্মীদের জন্য থাকা নিরাপদ আশ্রয়গুলোর ধারণক্ষমতাও শেষ হয়ে এসেছে, বলেছেন ডাভিডিয়ান।

“নারী অধিকার নিয়ে তালেবানের অবস্থানে স্বচ্ছতার ঘাটতি অবিশ্বাস্য আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। আর এই আতঙ্ক যে সারাদেশেই, তাও বোঝা যাচ্ছে।

“১৯৯০ এর দশকে তালেবান শাসনের স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বলে, সেসময় নারীর অধিকারের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ ছিল; বোধগম্য কারণেই নারী ও মেয়েরা ভয় পাচ্ছে,” কাবুল থেকে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন ডাভিডিয়ান।

দুই দশক পর ফের আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতায় ফেরা তালেবান নেতারা এবার ইসলামী আইন বা শরিয়ার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নারীর অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আগের তালেবান শাসনামলে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নারীরা চাকরি করতে পারত না, মেয়েদের জন্য স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। সেসময় নারীদেরকে অবশ্যই ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পুরো মুখ ঢেকে বের হতে হত, সঙ্গে রাখতে হত পুরুষ কোনো আত্মীয়কে।

অস্ট্রেলিয়ার এসবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঊর্ধ্বতন এক তালেবান কর্মকর্তা বলেছেন, এবারও আফগানিস্তানে নারীদের ক্রিকেট এবং সম্ভবত কোনো ধরনের খেলাতেই অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে না।

“কারণ, এর প্রয়োজন নেই এবং (খেলায়) তাদের শরীর উন্মুক্ত হয়ে যেতে পারে,” বলেছেন ওই কর্মকর্তা।

গত মাসে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া কট্টর ইসলামপন্থি এ গোষ্ঠী মঙ্গলবার তাদের নতুন যে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করেছে সেখানেও কোনো নারী নেই। এর প্রতিবাদে কাবুলে কয়েক ডজন নারী বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।

তারা সরকারে নারী প্রতিনিধিত্ব এবং নারীর অধিকার সুরক্ষিত রাখার দাবি জানিয়েছেন।

“তারা যে সত্যিই সবাইকে নিয়ে সমৃদ্ধ একটি সমাজ গড়তে চায়, গতকালের (মন্ত্রিসভার) ঘোষণায় বিশ্বকে তা দেখানোর সুবর্ণ সুযোগ হারিয়েছে তালেবান,” বুধবার এমনটাই বলেছেন বিশ্বব্যাপী জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের নারী বিষয়ক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডাভিডিয়ান।