'বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত’ করায় ৫ লাখ রুপি জরিমানা মমতার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে পাঁচ লাখ রুপি জরিমানা করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারক।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2021, 10:12 AM
Updated : 7 July 2021, 12:14 PM

বুধবার এ জরিমানা করার পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসনের ভোট পুনর্গণনার মামলা থেকে ওই বিচারক নিজেকে সরিয়েও নিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আনন্দবাজার অনলাইন।

মমতাকে জরিমানা করে বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন, বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করার জন্যই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। জরিমানার অর্থ জমা দিতে হবে রাজ্য বার কাউন্সিলে, যা পরবর্তীকালে কোভিড চিকিৎসায় ব্যয় হবে।

নন্দীগ্রামে ভোট পুনর্গণনার মামলাটি কোন বেঞ্চে যাবে,তা পরে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ঠিক করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসনে ফল গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে মমতা এ মামলাটি করেছিলেন। কিন্তু মামলা কৌশিক চন্দের বেঞ্চে ওঠার পর পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়।

তৃণমূল জানায়, কৌশিকের সঙ্গে একসময় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এ কারণে নিরপেক্ষ বিচার হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তারা।

আদালত তৃণমূলের ওই আবেদন খারিজ করে দেয় বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

পরে বুধবার কৌশিক চন্দ বলেন, তার বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরছেন না তিনি। বরং বিষয়টি নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করতেই তার সরে দাঁড়ানোর এই সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে একটি রাজনৈতিক দলের গভীর সম্পর্ক রয়েছে, তাই মামলাটি ছেড়ে দেওয়া উচিত— এই অভিযোগের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সাধারণ মানুষের উপর ছাড়া যায় না। এটা বিচারপতি ঠিক করবেন।

“কারও কোনও রাজনৈতিক দল পছন্দ থাকতে পারে না, এটা এ দেশে প্রায় অসম্ভব। বিচারপতিরাও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন। তারাও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ভোট দেন। তাছাড়া বিচারপতির নিয়োগ সংক্রান্ত সিক্রেট রিপোর্ট জনসমক্ষে আনাটা কি ঠিক? একজন মুখ্যমন্ত্রী গোপনীয়তা বজায় রাখারও শপথ নেন।”

মুখ্যমন্ত্রীকে জরিমানা করার প্রতিক্রিয়ায় তার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান বলেছেন, “একজন মুখ্যমন্ত্রীকে এই ভাবে জরিমানা করা লজ্জাজনক ঘটনা। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ব্যবস্থা করছি।”

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইটারে লেখেন, “আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বাস করছি যেখানে সত্যি বলার জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়। আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বাস করি যেখানে মি‌থ্যে প্রচারের জন্য কোনও দাম দিতে হয় না। প্রসঙ্গটা ধরা গেল?  পারলে একমাত্র মোদীই পারেন।”