মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী মিলিশিয়ার সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ

মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে নবগঠিত মিলিশিয়া দলের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলটির করা বিভিন্ন পোস্ট ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2021, 08:44 AM
Updated : 22 June 2021, 08:44 AM

মঙ্গলবারের এই সংঘর্ষের সময় নিরাপত্তা বাহিনী সাঁজোয়া যান ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছে তারা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করার পর জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ দমন করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এর প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারজুড়ে ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’ বলে পরিচিত সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী দলগুলোর আবির্ভাব ঘটতে শুরু করে।

এ পর্যন্ত হালকা অস্ত্রে সজ্জিত এসব মিলিশিয়াদের লড়াই ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকাগুলোতে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার নিজেদের মান্দালয়ের নতুন ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ বলে দাবি করা একটি দল জানিয়েছে, সেনাবাহিনী তাদের একটি ঘাঁটিতে অভিযান চালানোর পর তারা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

দলটির ফেইসবুক পেইজে নিজেকে মেজর জিকওয়াত বলে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি বলেছেন, “আমাদের গেরিলাদের একটি বেইস ক্যাম্প আক্রান্ত হওয়ার পর আমরা পাল্টা হামলা চালিয়েছি।”

খিত থিট গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী তিনটি সাঁজোয়া যান নিয়ে মান্দালয়ের একটি বোর্ডিং স্কুলে অবস্থিত মিলিশিয়াদের একটি ঘাঁটি ঘিরে ফেলেছিল।

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ফোন করা হলেও সামরিক জান্তার এক মুখপাত্র জবাব দেননি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।  

দেশটির অন্যান্য এলাকায় মিলিশিয়া দলগুলো সৈন্যদের ওপর আক্রমণ করার পর সেনাবাহিনী কামানের গোলা ছুড়ে ও বিমান হামলা চালিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এসব সংঘর্ষে উভয়পক্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে ও লাখো লোক বাস্তুচ্যুত হয়ে নিকটবর্তী বনসহ আশপাশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রতি নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফলকে শ্রদ্ধা জানাতে ও সু চি-সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানায়। 

শনিবার মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি দিয়ে জাতিসংঘের ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। এই প্রস্তাব ‘একতরফা অভিযোগ ও মিথ্যা অনুমানের ভিত্তিতে’ করা বলে অভিযোগ করেছে তারা।

মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তার নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ৮৭৩ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে বলে দেশটির একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে। তবে সামরিক জান্তা এ তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত করে নিহতের সংখ্যা আরও অনেক কম বলে দাবি করেছে।