সম্প্রতি অ্যাক্সিওস এইচবিও-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছেন।
ওই সাক্ষাৎকারে ইমরান চীনর উইঘুর মুসলিম ও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর নিয়েও কথা বলেছেন। কাশ্মীরে ভারত যা করছে বিশ্ব সম্প্রদায় তা উপেক্ষা করে তাদের মনোযোগ শুধু চীনের শিনজিয়াংয়ের দিকে কেন দিয়ে রেখেছে, এ প্রশ্নও তুলেছেন ইমরান।
পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র ‘আত্মরক্ষামূলক’ দাবি করে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে এর প্রয়োজন ফুরাবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি, জানিয়েছে ডন অনলাইন।
সোমবার সকালে ইমরানের এ সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে এটি লোকজনকে আকর্ষণ করতে শুরু করে আর তারা তার এসব মন্তব্য নিয়ে আলোচনা শুরু করেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচারিত হওয়ার আগেই অ্যাক্সিওস যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তান বিষয়ে তার মন্তব্যগুলো প্রকাশ করেছিল।
সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী জোনাথন সোয়ানকে ইমরান বলেন, পাকিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আফগানিস্তানে আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও তালেবানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-কে ‘কোনোভাবেই’ অনুমতি দেবেন না।
আফগানিস্তান থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্কিন সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহারের জো বাইডেনের পরিকল্পনার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সহযোগিতাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন অভিযান চালানোর বিরোধিতা করে আসছেন ইমরান। পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তারাও সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেছিলেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
তার এ অবস্থান পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং দেশটিতে অনলাইনে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ‘অ্যাবসলিউটলিনট’ ট্রেন্ডিং শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
কিন্তু চীনের শিনজিয়াং ও সেখানকার সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে ইমরানের মন্তব্য অ্যাক্সিওস সাক্ষাৎকার সম্প্রচারের আগে প্রকাশ করেনি। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য সামনে আসার পর সেগুলো উৎসাহের সঙ্গে স্বাগত জানায়নি পাকিস্তানিরা।
চীনের সঙ্গে যেকোনো ইস্যুতে পাকিস্তান ‘রুদ্ধদ্বার কক্ষে’ কথা বলে জানিয়ে ইমরান পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, কাশ্মীরে ভারত যা করছে তা কেন একটি ইস্যু হচ্ছে না, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরকে তিনি ‘উন্মুক্ত বন্দি শিবির’ উল্লেখ করে এসব ক্ষেত্রে ‘ভণ্ডামি’ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
ইমরান বলেন, “আমাদের সীমান্তে কী ঘটছে আমার কাছে তাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
এ সময় সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী তাকে স্মরণ করিয়ে দেন যে চীনও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী দেশ।
এর উত্তরে ইমরান বলেন, “যেভাবে তারা (চীন) করছে তাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখি আমি আর ইস্যু যাই হোক না কেন আমরা রুদ্ধদ্বার কক্ষে কথা বলি।”
চীনকে পাকিস্তানের সবচেয়ে কঠিন সময়ে পাশে থাকা অন্যতম ‘মহান বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বলেন, “যখন আমরা সত্যিই কঠিন সময় পার করছিলাম এবং আমাদের অর্থনীতি ধুঁকছিল, তারা আমাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে এসেছিল।”