মহারাষ্ট্রের কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের সদস্য মুম্বাইয়ের ফরটিস হাসপাতালের পরিচালক রাহুল পণ্ডিত রয়টার্সকে এতথ্য জানিয়েছেন।
ভারতজুড়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ের দৈনিক গড় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কিছুটা কমে আসায় অনেক এলাকাতেই স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছে, ব্যতিক্রম হয়নি মহারাষ্ট্রেও। সেখানকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর ও ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত মুম্বাইয়েও বিপণী, পেক্ষাগৃহ, শরীরচর্চা কেন্দ্রগুলো অর্ধেক ধারণক্ষমতা ব্যবহারের শর্তে খুলে দেওয়া হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে রাহুল পণ্ডিত বলেন, “আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য আমাদের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি রাখা উচিত, যখনই পরের ঢেউটি আঘাত হানবে তখনই যাতে মোকাবেলা করা যায়।
“আমাদের প্রচেষ্টা থাকা উচিত সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ যতটা সম্ভব দেরি করিয়ে দেওয়া। এমনকি তা প্রতিরোধের চেষ্টা করা উচিত।”
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পরিচালিত রয়টার্সের জরিপে দেখা যায়, অক্টোবর নাগাদ করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ ভারতে দেখা দিতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। তবে তার মোকাবিলা দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়ে ‘অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত’ থাকবে বলে তারা আশা করছেন।
এছাড়া এই মহামারী আরও অন্তত এক বছর জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে থাকবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছেন তারা।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের উপকেন্দ্র হয়ে উঠা মহারাষ্ট্র এখনও পুরোপুরি এর ধকল সামলে উঠতে পারেনি উল্লেখ করে রাহুল পণ্ডিত বলেন, এপ্রিলে রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা যখন প্রায় ভেঙে পড়ার পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তখন রাজ্য সরকার লকডাউনে যেতে বাধ্য হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে বাজার-ঘাট-রাস্তায় বিপুল জনসমাগম, প্রায় কোনো সামাজিক দূরত্বই মানা হচ্ছে না।
শুক্রবার ভারতে ৬২ হাজার ৪৮০ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে এবং মারা গেছে এক হাজার ৫৮৭ জন, যা দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
তবে ভারত ও ব্রাজিল এখনও বিশ্বে সাত দিনের গড় মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে অবস্থান করছে।
মহারাষ্ট্রেও ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিত হয়েছে ৯ হাজার ৮৩০ জন। ভারতে মোট ২ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার সংক্রমিতের এক-পঞ্চমাংশই মহারাষ্ট্রে সনাক্ত হয়েছে। এই রাজ্যে কোভিড-১৯ এ পর্যন্ত মারা গেছে এক লাখ ১৬ হাজার জন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদক দেশ হওয়া স্বত্ত্বেও ভারত এখন পর্যন্ত তার টিকা পাওয়ার যোগ্য প্রাপ্তবয়স্ক ৯৫ কোটি জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশকে টিকা দিতে পেরেছে।