মিয়ানমারে লড়াইয়ের পর গ্রামে অগ্নিসংযোগ, নিহত ২

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় একটি গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতাসীন জান্তা বিরোধীদের সংঘর্ষের পর একটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া দেওয়া হয়েছে, এতে দুই বৃদ্ধ পুড়ে মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2021, 04:36 AM
Updated : 17 June 2021, 04:36 AM

বুধবার গ্রামটির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এ ঘটনার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে দায় দিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, মাগওয়ে অঞ্চলের প্রায় ৮০০ বাসিন্দার গ্রাম কিন মা-তে মঙ্গলবার ‘সন্ত্রাসীরা’ আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল আর যে গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে অন্যকিছু বলা হচ্ছে তারা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে সামরিক বাহিনীর সুনামহানির চেষ্টা করছে’। 

রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে আগুন লাগার কারণ যাচাই করতে পারেনি এবং এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও জান্তার মুখপাত্র জবাব দেননি বলে জানিয়েছে।

পুড়ে যাওয়া গ্রামটির বেশ কিছু ছবি রয়টার্স দেখেছে এবং গ্রামটির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা টেলিফোনে বার্তা সংস্থাটিকে বলেছেন, বুধবার কিন মাতে শুধু ৩০টির মতো ঘর অবশিষ্ট ছিল, প্রায় ২০০ ঘর পুড়ে ছাই ও ইটের স্তূপে পরিণত হয়েছে।

নাসার স্যাটেলাইট ফায়ার-ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে রেকর্ড করার মতো বড় ছিল আগুনটি, যা মঙ্গলবার ১৫২২ জিএমটিতে রেকর্ড করা হয়; জানিয়েছে রয়টার্স।

পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে গ্রামবাসীরা বলেন, জান্তা বিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর নিরাপত্তা বাহিনী গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে আর তাতে অন্তত দুই জন পুড়ে মারা যায়।  

গ্রামটির বাস্তুচ্যুত বাসিন্দাদের সহায়তায় নিয়োজিত ৩২ বছর বয়সী একজন স্বেচ্ছাসেবী জানান, যে দুই জন মারা গেছেন তারা বৃদ্ধ, আগুন লাগার পর বাড়ি ছেড়ে পালাতে পারেননি তারা। কিছু লোক বুধবার গ্রামে ফিরে তাদের মৃতদেহ দেখতে পায় বলে জানিয়েছেন তিনি। 

রয়টার্সের সঙ্গে যারা কথা বলেছেন সেই গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গ্রামটির অধিকাংশ বাসিন্দাই নিকটবর্তী বনগুলোতে লুকিয়ে আছেন।

এমআরটিভি বলেছে, ৪০ জন ‘সন্ত্রাসী’ কিন মা-র একটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে, এখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গ্রামটির ২২৫টি বাড়ির মধ্যে শতাধিক বাড়ি পুড়ে যায়।

১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে সহিংসতা ও সামরিক শাসন বিরোধী প্রতিবাদ চলছে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী ৮৬০ জন বেসামরিককে হত্যা করেছে বলে দেশটির একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত বেসামরিকের সংখ্যা আরও কম বলে দাবি করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী।