পাকিস্তানে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ৬৫

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৫ জনে দাঁড়িয়েছে, আহতের সংখ্যা ১৫০ জনেরও বেশি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2021, 04:00 AM
Updated : 8 June 2021, 09:28 AM

মঙ্গলবার ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে আরও ১২টি মৃতদের উদ্ধার করা হয় বলে ডন নিউজ জানিয়েছে।

সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে সিন্ধুর ঘোটকি জেলার দারকি শহরের কাছে করাচি থেকে আসা ট্রেন মিল্লাত এক্সপ্রেসের আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পিছলে ডাউন ট্রাকে চলে যায়, তখন ওই লাইনে অপরদিকে দিক থেকে আসা স্যার সৈয়দ এক্সপ্রেস নামের আরেকটি ট্রেন বগিগুলোকে সজোরে ধাক্কা দেয়।

মিল্লাত এক্সপ্রেস করাচি থেকে সারগোদা যাচ্ছিল আর সৈয়দ এক্সপ্রেস রাওয়ালপিন্ডি থেকে আসছিল। এই দুটি ট্রেনে প্রায় ১২০০ যাত্রী ছিলেন।

সোমবার সারাদিন ধরে উদ্ধার কাজ চালানোর পরও মঙ্গলবার ভোরেও ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক যাত্রী আটকা পড়ে ছিলেন, তাই হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।

ঘোটকির রাইতি ও ডাকারকি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।  স্থানীয় কৃষক ও গ্রামবাসীরা প্রথম ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। উদ্ধারকাজে ও আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে তারা ট্র্যাক্টরও ব্যবহার করেন। পরে পুলিশ, আধা-সামরিক বাহিনী, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও সেনা সদস্যরা উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।

সিন্ধুর ঘোটকি জেলার দারকি শহরের কাছে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ছবি: ডননিউজটিভি

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুরুষ, নারী ও শিশুসহ ৬০ জন যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন এবং ১৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন; কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা নিহতের সংখ্যা ৫৫ জন বলে জানিয়েছিলেন।

লাইনচ্যুত মিল্লাত এক্সপ্রেসের যাত্রী আখতার রাজপুত বলেন, “প্রথম ঘটনায় আমরা একে অপরের ওপর পড়ে গেলেও আঘাত তত গুরুতর ছিল না, ঠিক তখনই কোত্থেকে আরেকটি ট্রেন এসে আমাদের সজোরে আঘাত করে। জ্ঞান ফিরে আসার পর দেখি আমরা চারপাশে অনেক যাত্রী পড়ে আছেন, কয়েকজন বগি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন।”

শহীদ নামের আরেক যাত্রী বলেন, “অন্য ট্রেনটি যখন আঘাত করলো কী হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না, দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলাম।”

ঘোটকির এসএসপি উমর তুফায়েল বলেছিলেন, “একটি বগি ইঞ্জিনের নিচে চলে গেছে, সেখানে তিনটি মৃতদেহ আটকা পড়ে থাকতে দেখেছি আমরা, অন্য জায়গায় আরও দুটি মৃতদেহ দেখা গেছে; তাই মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে।”

পাকিস্তান রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, মিল্লাত এক্সপ্রেসে ৭০৩ জন ও স্যার সৈয়দ এক্সপ্রেসে ৫০৫ জন যাত্রী ছিলেন।

রেলওয়েটির মুখপাত্র জানিয়েছেন, পাকিস্তান রেলওয়ের নীতি অনুযায়ী নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লাখ রুপি করে ও আহতদের ৫০ হাজার থেকে ৩০ হাজার রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেবে কর্তৃপক্ষ। 

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ দুর্ঘটনায় ‘হতাশা’ প্রকাশ করে দায়ীদের খুঁজে বের করতে পূর্ণ তদন্তের ‘আশ্বাস’ দিয়েছেন।

দুর্ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিওতে ট্রেনের বেশ কয়েকটি দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বগি উল্টে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কী কারণে প্রথম ট্রেনটি লাইচ্যুত হয়েছিল তা শেষ খবর পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।