গুজরাটে আছড়ে পড়ার পর দুর্বল হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় তকতে

ভারতের পশ্চিম উপকূলে আছড়ে পড়ার পর শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তকতে দুর্বল হতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2021, 08:07 AM
Updated : 18 May 2021, 08:07 AM

ঘূর্ণিঝড়টির পথে থাকা লাখো মানুষকে এরই মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার রাতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ কিলোমিটার গতির বাতাস নিয়ে স্থলে উঠে আসা তকতের কারণে গুজরাটের উপকূলীয় গ্রাম ও শহরগুলোতে বাতাসের তীব্র ঝাপটা অনুভূত হয়েছে, উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছ।

দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে গুজরাটে এর চেয়ে শক্তিশালী আর কোনো ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানেনি।

ক্ষয়ক্ষতি কমাতে রাজ্যটির কর্তৃপক্ষ ঝড়টির পথে থাকা দুই লাখেরও বেশি মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেয়; বন্ধ রাখা হয়েছে সমুদ্র বন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিমানবন্দর।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের দেওয়া সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, কয়েক ঘণ্টার ভেতরই তকতে শক্তি হারিয়ে ‘অতি প্রবল’ থেকে ‘প্রবল’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে যাচ্ছে।

ঝড়টি এখন পর্যন্ত ২৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রে ছয় জনের মৃত্যু ও নয় জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে দেখছেন। তীব্র বাতাসের ধাক্কায় সড়কে পড়ে থাকা গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে নেওয়ায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়ে এসেছে বলে তার দপ্তর টুইটারে জানিয়েছে।

কর্ণাটকে ঘূর্ণিঝড়-সম্পর্কিত ঘটনায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের কারণে কেরালায় সাত জনের প্রাণ গেছে এবং দেড় হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।

দমকা বাতাসের কারণে রোববার গোয়ায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড় গুজরাটেও চার জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

ভারতের নৌবাহিনী মুম্বাই উপকূল থেকে ভেসে যাওয়া একটি বার্জ থেকে ১৭৭ জনকে উদ্ধার করতে পেরেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।  প্রবল ঝড়ের তোড়ে ভেসে মাঝ সমুদ্রে চলে যাওয়া আরও কয়েকটি বার্জে থাকা লোকদের উদ্ধারে নজরদারি বিমান, একাধিক হেলিকপ্টার ও রণতরী মোতায়েন করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপুল রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাওয়া ভারতীয় কর্মকর্তাদের ওপর তকতে আরও চাপ বাড়াবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

ঝড়ের কারণে বিভিন্ন হাসপাতালে মেডিকেল অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটতে পারে, এমন উদ্বেগও আছে।

“আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে সড়ক পরিষ্কার রাখা, যেন অক্সিজেন নিয়ে চলাচলে কোনো প্রভাব না পড়ে,” বলেছেন গুজরাটের ভাবনগর জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা গৌরাং মাকওয়ানা।