কোভিড-১৯: ভারতে ফের দৈনিক শনাক্ত ৪ লাখের বেশি, মৃত্যু ৪০৯২

করোনাভাইরাসের প্রাণঘাতী দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল ভারতে এক সপ্তাহের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো একদিনে চার লাখের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ও টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চার হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2021, 04:31 AM
Updated : 9 May 2021, 05:50 AM

রোববার সকালে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় সেখানে চার লাখ তিন হাজার ৭৩৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং একই সময় ৪০৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

একদিন আগে দেশটি প্রথমাবারের মতো চার হাজারের বেশি মৃত্যু দেখেছে। সেদিন চার হাজার ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মহামারী শুরু হওয়ার পর ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এটি।

এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালের আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে চার লাখ ১৪ হাজার ১৮৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, যা বিশ্বে যে কোনো দেশে দৈনিক শনাক্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশটিতে শনাক্ত করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৪১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত।

যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর মহামারীতে মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতে মোট মৃত্যু দুই লাখ ৪২ হাজার ৩৬২ জনে দাঁড়িয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সংকট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা বিভিন্ন মর্মভেদী ও ক্ষুব্ধ বার্তা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার পর ভারতের সর্বোচ্চ আদালত প্রাণধারণের জন্য জরুরি গ্যাসটির প্রাপ্যতা ও বিতরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখতে ১২ সদস্যের একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে। 

এদিকে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) উৎপাদিত একটি অ্যান্টি-কোভিড ওষুধ জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিসিজিআই।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা গেছে, ওষুধটির মধ্যে থাকা একটি অণু হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের দ্রুত সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করছে এবং সরবরাহকৃত অক্সিজেনের ওপর নির্ভরতা হ্রাস করছে।

শনিবার দেশটির সরকার বলেছে, কোভিড-১৯ রোগীদের ভর্তি সংক্রান্ত জাতীয় নীতিটি সংশোধন করা হয়েছে আর এতে হাসপাতালগুলোকে বলা হয়েছে ‘কোনোভাবেই কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না’। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট আর লাগবে না। হাসপাতালগুলো অন্য শহরের রোগীদেরও আর ফিরিয়ে দিতে পারবে না।

মহামারী পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাজ্যে লকডাউন জারি করা হয়েছে। তারপরও সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানো যাচ্ছে না। দেশটির বিরোধীদলীয় নেতারা দেশজুড়ে বিধিনিষেধ আরোপের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার তামিল নাডু ও পুদুচেরি লকডাউন ঘোষণা করেছে। এর আগে থেকেই কেরালা, বিহার, কর্নাটক, উড়িষ্যাসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে কঠোর লকডাউন জারি আছে।     

মোদী মহারাষ্ট্র, তামিল নাডু, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে শনিবার টেলিফোনে কথা বলেছেন। ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে মহারাষ্ট্রে।  

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়ে অনেক বেশি।