দেশটির রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম শনিবার এ খবর দিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখল করে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিকে কারাবন্দি করার পর থেকে দেশে শৃঙ্খলা আরোপ করতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
দেশটি থেকে প্রতিদিন বোমা হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে এবং সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করার জন্য স্থানীয়রা মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করছে। এর পাশাপাশি দেশটিজুড়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভও অব্যাহত আছে আর অভ্যুত্থান বিরোধীদের ধর্মঘটে অর্থনীতি অচল হয়ে পড়েছে।
জাতীয় ঐক্য সরকার বা এনইউজি গত সপ্তাহে এক ঘোষণায় জানিয়েছে তারা গণপ্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলবে। গোপনে নিজেদের কার্যক্রম চালানো এনইউজি সেনাবাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এনউজি, যা সিআরপিএইচ বলে পরিচিত ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের একটি কমিটি ও তাদের নতুন বাহিনী, এরা সবাই এখন থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আসবে বলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন এমআরটিভি ঘোষণা করেছে।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, “তাদের কর্মকাণ্ড বিভিন্ন জায়গায় বহু সন্ত্রাসবাদের কারণ হয়েছে। (তারা) বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগ, খুনের পাশাপাশি সরকারের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ধ্বংস করার হুমকি দিয়েছে।”
এর আগে বিরোধীদেরকে দেশদ্রোহী বলে অভিযুক্ত করেছিল জান্তা।
এই ঘোষণায় ফলে মিয়ানমারের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী এনইউজির সদস্যপদ নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি এদের সঙ্গে যোগাযোগও বেআইনি বলে বিবেচিত হবে।
শনিবার মিয়ানমারের বহু জায়গায় জান্তা বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে চলে আসা এসব বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ৭৭৪ জন বেসামরিককে হত্যা ও ৩৭৭৮ জনকে আটক করেছে বলে আন্দোলনকারী গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে।
এসব সংখ্যার বিষয়ে জান্তা দ্বিমত পোষণ করেছে আর প্রতিবাদ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ২৪ জন সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে।
মিয়ানমারের সীমানার মধ্যে কয়েক দশক ধরে লড়াই করে আসা জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনীগুলোর সঙ্গেও সম্প্রতি লড়াই উস্কে উঠেছে। এসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কয়েকটি জান্তা বিরোধী প্রতিবাদকারীদের সমর্থন যোগাচ্ছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্তা টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী দেশটির উত্তরাঞ্চলে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির বিরুদ্ধে এগিয়ে গেছে; কিন্তু তাদের এ তথ্য স্বতন্ত্রভাবে কেউ নিশ্চিত করেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে নতুনভাবে গঠিত চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স জানিয়েছে, তারা সেনাবাহিনীর একটি শিবির দখল করে নিয়েছে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি।