কোভিড-১৯: ভারতজুড়ে লকডাউন দিতে বললেন রাহুল

শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি পেরিয়ে যাওয়া ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2021, 10:29 AM
Updated : 4 May 2021, 10:29 AM

দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী পাওয়ার পর শনাক্ত রোগী এক কোটির ঘর পার হতে সময় লেগেছিল ১০ মাস, পরের এক কোটি পেতে সময় লাগল সাড়ে চার মাসের মতো।

দেশটিতে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যাই সাড়ে ৩৪ লাখ বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩ লাখ ৫৭ হাজার ২২৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত ও ৩ হাজার ৪৪৯ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে।

ভারতে সরকারি হিসাবে শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর তথ্য দেওয়া হয় তাতে সংক্রমণের ‘প্রকৃত অবস্থা’ বোঝা যায় না বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। দেশটিতে প্রকৃত আক্রান্তের পরিমাণ সরকারি হিসাবের ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি হতে পারে বলেও ধারণা তাদের।

“এখন করোনার বিস্তার ঠেকানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে পুরোপুরি লকডাউন দেওয়া। ভারত সরকারের নিস্ক্রিয়তা অনেক নিরীহ মানুষকে মারছে,” বলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল।

অর্থনীতির পতন ঠেকাতে এবারের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় দেশজুড়ে লকডাউনের বিরোধিতা করে আসছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তবে অনেক রাজ্য সংক্রমণ মোকাবেলায় নিজেদের মতো করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

ভারতে প্রথম শনাক্ত তুলনামূলক বেশি সংক্রামক ধরনের কারণেই শতকোটির বেশি জনসংখ্যার দেশটিতে আক্রান্ত-মৃত্যুর উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। রোগীর চাপে দেশটির অনেক এলাকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই ভেঙে পড়েছে।

আক্রান্তদের চিকিৎসায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মেডিকেল অক্সিজেনের ঘাটতির খবর পাওয়া যাচ্ছে অনেক রাজ্যে; শয্যা, অক্সিজেন ও ওষুধের সঙ্কটের কারণে অসংখ্য রোগী অ্যাম্বুলেন্স বা হাসপাতালগুলোর গাড়ি পার্কিংয়েই নেতিয়ে পড়ছেন।

শ্মশানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেকেই প্রিয়জনদের শেষকৃত্য সারছেন পার্ক বা গাড়ি পার্কের জায়গায়।

সংক্রমণ মোকাবেলায় বিধিনিষেধ না দিয়ে উল্টো কুম্ভমেলার মতো ধর্মীয় উৎসব এবং বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচন ও তা ঘিরে সভা-সমাবেশ, প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় দেশে-বিদেশে মোদীর সমালোচনাও চলছে।

“দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং বিভিন্ন রাজ্যের সরকারও যে প্রস্তুত ছিল না, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলো তা উন্মোচন করে দিয়েছে,” মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক সম্পাদকীয়তে এমনটাই বলা হয়েছে।

শনিবার ভারত একদিনে ৪ লাখের বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল; তারপর থেকে টানা তিনদিন শনাক্তের পরিমাণ কমে আসতে দেখা যাচ্ছে। একে ‘খানিকটা স্বস্তিদায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।