কোভিড- ১৯: প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে টিকা দেবে ভারত

সরবরাহে ঘাটতির মধ্যেই করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে পর্যুদস্ত ভারতে টিকার আওতা বাড়ানো হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2021, 07:05 AM
Updated : 20 April 2021, 07:38 AM

রেকর্ড ছাড়ানো আক্রান্ত আর মৃত্যুর চাপে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হওয়ায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে রাজধানী অঞ্চল দিল্লিতে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, কোভিড- ১৯ মহামারী মোকাবেলায় মোদী প্রশাসনের সমালোচনার মধ্যে সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পয়লা মে থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে।

ঘোষণায় বলা হয়, টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ৫০ শতাংশ টিকা হস্তান্তর করতে হবে, বাকিটা রাজ্য সরকার এবং খোলা বাজারে দিতে হবে আগের ঠিক করা দামে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, দেশটিতে এখন স্বাস্থ্যকর্মী, কোভিড- ১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইরত সামনের সারির কর্মী এবং ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে ইতোমধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত রাজ্য মহারাষ্ট্রে টিকা সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, তাদের হাতে মাত্র দুই কোটি ৭০ লাখ ডোজ আছে, যা দিয়ে চলমান টিকা কর্মসূচি নয়দিন চালানো যাবে।

অন্যদিকে অর্থ সংকটে চাহিদা অনুযায়ী টিকা সরবরাহ বাড়াতে পারছে না বলে জানিয়েছে দেশটিতে থাকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউ অব ইন্ডিয়া।

পরে এই প্রতিষ্ঠানসহ টিকা উৎপাদনকারী অপর প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেকের জন্য ৬০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়।

মঙ্গলবার সকালের পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও দুই লাখ ৫৯ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদিন দৈনিক মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে, মারা গেছেন ১৭৬১ জন; এতে মৃতের মোট সংখ্যা এক লাখ ৮০ হাজার ৫৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। মোট এক কোটি ৫৩ লাখেরও বেশি আক্রান্ত নিয়ে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে এখন ভারত।

সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতিতে হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেন ও ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে । বিদ্যমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় এই চাপ সামলানো সম্ভব না জানিয়ে সোমবার দিল্লিতে ছয় দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল।

সোমবার ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “যদি এখন লকডাউন কার্যকর করা না হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। আমি সবসময়ই লকডাউনের বিপক্ষে, কিন্তু এর ফলে দিল্লির হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো যাবে।”

দিল্লিসহ ভারতে মোট ১৩টি রাজ্যে লকডাউন, বিধিনিষেধ বা কারফিউ জারি রয়েছে। এর মধ্যে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল মহারাষ্ট্র এবং মোদীর নিজ রাজ্য গুজরাটের শিল্পনগরী আহমেদাবাদেও হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে।

একদিন আগেই কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, দিল্লিতে দুই কোটি মানুষের বিপরীতে হাসপাতালে আইসিইউ বেড ১০০টিরও কম আছে।

দেশটিতে চলমান বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিভিন্ন স্থানে জনসভায় ভাষণ দেয়া এবং কুম্ভ মেলায় হিন্দু পূণ্যার্থীদের সমাগম নিয়েও উঠেছে সমালোচনার ঢেউ।