করোনাভাইরাসের নতুন ভারতীয় ধরন আরও সংক্রামক হতে পারে

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ভারতীয় ধরন উচ্চমাত্রার সংক্রামক ও বিপজ্জনক হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2021, 07:27 AM
Updated : 21 Feb 2021, 08:16 AM

অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস)-এর প্রধান রনদীপ গুলেরিয়ার এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

নতুন এই ধরন করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া ব্যক্তিদেরও পুনঃসংক্রমিত করতে পারে বলে দাবি করেছেন গুলেরিয়া।

ভারতজুড়ে এ পর্যন্ত ২৪০ জনের দেহে ভাইরাসের এ নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে মহারাষ্ট্রে ফের সংক্রমণ বাড়ার যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তার পেছনে নতুন এ ধরনটিই আছে বলে জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের কোভিড টাস্ক ফোর্সের সদস্য ডাঃ শশাঙ্ক জোশি, জানিয়েছে এনডিটিভি।

মহারাষ্ট্র ছাড়াও কেরালা, মধ্য প্রদেশ, ছত্তিশগড় ও পাঞ্জাবেও ফের আক্রান্তের সংখ্যা উর্ধ্বমুখী হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।

ভারতের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের হার্ড ইমিউনিটি একটি ‘মিথ’ হয়ে থাকতে পারে, কারণ সুরক্ষিত হওয়ার জন্য ভারতের মোট জনসংখ্যার অন্তত ৮০ শতাংশের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে হবে বলে জানিয়েছেন গুলেরিয়া। 

ভাইরাসের এই ধরনটিকে বিবেচনায় নিলে তা আরও কঠিন হয়ে উঠবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

জনসংখ্যার একটি হিসাবকৃত অংশকে টিকাদান করার মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার ওপর নির্ভর করছে ভারত সরকারের টিকাদান পরিকল্পনা। প্রথম পর্বে দেশটির সরকার তিন কোটি স্বাস্থ্য কর্মী ও অন্যান্য ফ্রন্টলাইন কর্মীদের টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। এরপর ৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বের সবাইকে এবং গুরুতর অসুস্থদের টিকা দেওয়া হলে সংখ্যাটি ২৭ কোটিতে গিয়ে ঠেকবে। 

হার্ড ইমিউনিটি অর্জন কেন সম্ভব না, এর ব্যাখ্যায় গুলেরিয়া বলেন, মিউটেশন বা ভাইরাসটির ধরনগুলোর ‘প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়ানোর কৌশল’ আছে। টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করা ব্যক্তির জন্যও এগুলো হুমকি হয়ে উঠতে পারে এবং পুনঃসংক্রমণ ঘটাতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে তিনি ‘কোভিড-যথোচিত ব্যবহার’ মেনে চলার ওপর জোর দেন।

বলেন, “ভারতের পরীক্ষা, সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখার মতো আগ্রাসী পদক্ষেপগুলোতে ফিরে যাওয়া দরকার।”

করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের বিরুদ্ধে ভারতের টিকাগুলো কার্যকর হবে কিনা প্রসঙ্গে গুলেরিয়া বলেন, টিকাগুলো কার্যকর হবে, তবে কার্যকারিতা কিছুটা কম হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেছেন, টিকা নিয়েছেন এমন লোকজন হয়তো রোগটিতে আক্রান্ত হওয়া এড়াতে পারবে না কিন্তু তাদের সংক্রমণ মৃদু হবে।

ভাইরাসের নতুন এই ধরনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে টিকাগুলো আরও উন্নত করতে হবে কিনা, নিয়মিত নজরদারী থেকে পাওয়া তথ্য তা জানার প্রধান উপায়। আসছে মাসগুলোতে ‍টিকা তৈরির ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

পরিস্থিতি যাই হোক টিকা অবশ্যই নিতে হবে বলে জানিয়েছেন গুলেরিয়া।

এ পর্যন্ত এক কোটি সাত লাখেরও বেশি টিকার ডোজ স্বাস্থ্য কর্মী ও কোভিড পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নিয়োজিত ফ্রন্টলাইন কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলে শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে।