প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার মিয়ানমারে

মিয়ানমারে বড় সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা, রাত্রিকালীন কারফিউ জারি ও বিভিন্ন সড়ক বন্ধ করা সত্ত্বেও সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী অহিংস পদক্ষেপ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন বিরোধীরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2021, 04:05 AM
Updated : 9 Feb 2021, 04:42 AM

এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশজুড়ে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হওয়ার পর সোমবার রাতে সামরিক জান্তা ওইসব বিধিনিষেধ আরোপ করে।

১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থান ও নির্বাচিত বেসামরিক নেত্রী অং সান সু চিকে বন্দি করার প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারে টানা তিন দিন ধরে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছে, বাড়তে থাকা আইন অমান্য আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে হাসপাতাল, স্কুল ও সরকারি দপ্তরগুলোতে।

ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলার মধ্যে সোমবার প্রথম প্রথম টেলিভিশন ভাষণে সামরিক নেতা জেনারেল মিন অং হ্লাইং ফের একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কোনো প্রমাণ ছাড়াই গত নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

ওই নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) ব্যাপক জয় পেয়েছিল।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তরুণ আন্দোলনকারী মং সাউংখা বলেছেন, “আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো।”

বিবৃতিতে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও ‘স্বৈরাচারের সম্পূর্ণ পতনের’ আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি যে সংবিধান পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীকে ভিটো দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে তা বিলুপ্ত করার এবং জাতিগতভাবে বিভক্ত মিয়ানমারে ফেডারেল ব্যবস্থা প্রবর্তনের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

’৮৮ প্রজন্ম গোষ্ঠী’ বলে পরিচিত আরেকদল প্রবীণ আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের আরও তিন সপ্তাহ ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৮৮ সালে রক্তাক্তভাবে দমন করার জান্তা বিরোধী প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে এই গোষ্ঠীটি তৈরি হয়েছিল। 

গোষ্ঠির পক্ষ থেকে মিন কো নাইং এক বিবৃতিতে বলেন, “পুরো জাতির মধ্যে থাকা প্রতিবাদকারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ও একে অপরকে পদ্ধতিগতভাবে সহায়তা করার অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা।” 

মিয়ানমারজুড়ে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখানোর পর চার জনের বেশি একত্র হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জানিয়েছে, দুটি বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গন ও মান্দালয়ে স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদন পেয়েছে তারা।

ইয়াঙ্গনের কেন্দ্রীয় অংশের সঙ্গে জনবহুল এলাকাগুলোকে সংযুক্তকারী সেতুগুলো মঙ্গলবার করে দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

প্রতিবাদ বন্ধ করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আর কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বড় ধরনের সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় চার জন চার জনের দল করে প্রতিবাদ চালিয়ে নেওয়া উচিত বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন অভ্যুত্থান বিরোধী কিছু আন্দোলনকারী।