কোভিড-১৯: ভারতে অনুমোদন পেল অক্সফোর্ডের টিকা

ভারত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উৎপাদিত করোনাভাইরাসের টিকার অনুমোদন দিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2021, 01:35 PM
Updated : 2 Jan 2021, 01:45 PM

এর ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশটিতে টিকা দেওয়ার বিশাল কর্মযজ্ঞের পথ খুলে গেলো বলে মন্তব্য বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

শনিবার ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভাদেকার জানিয়েছেন, শুক্রবার এই টিকাটি সবুজ সংকেত পেয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পাওয়া প্রথম কোভিড-১৯ টিকা এটি।

যুক্তরাষ্ট্রের পর এ পর্যন্ত ভারতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে এক কোটি তিন লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে প্রায় দেড় লাখ রোগীর।

আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে ভারতে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির সরকার। এক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থ রোগী ও চিকিৎসক, নার্স, পুলিশসহ যারা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছেন তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এসব টিকার ব্যয়ভারও সরকার বহন করবে।

আনুষ্ঠানিক ভাবে টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার আগে, শনিবার দেশটির সবগুলো রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১১৬টি জেলার ২৫৯টি কেন্দ্রে মহড়া হয়েছে। পরিকল্পনা মতো প্রতিষেধক বণ্টন করা যাচ্ছে কি না, টিকা দেওয়ায় কী কী বাধা আসছে, মহড়ায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জাভাদেকার জানিয়েছেন, ভারতে আরও অন্তত তিনটি টিকা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এগুলো হল স্থানীয় কোম্পানি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন, জাইডাস ক্যাডিলাসের জাইকোভ-ডি ও রাশিয়ার স্পুৎনিক-ভি।

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য গত ৩০ ডিসেম্বর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। এরপর এ টিকা আর্জেন্টিনাতেও অনুমোদন পায়।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, আগামী এক বছরে তারা পুরো বিশ্বের জন্য তিন বিলিয়ন ডোজ টিকা তৈরি করবে। ভারতে এই টিকা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইনডিয়া (এসআইআই) ।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উৎপাদিত টিকার ভারতীয় সংস্করণের নাম ‘কোভিশিল্ড’ বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

এসআইআইয়ের পরিচালক উমেশ শালিগ্রাম পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাদের কাছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সাড়ে ৭ কোটি ডোজ রয়েছে আর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে মজুদ ১০ কোটিতে পৌঁছে যাবে বলে আশা করছেন তারা।

অক্সফোর্ডের টিকা রেফ্রিজারেটরের সাধারণ তাপমাত্রাতেই সংরক্ষণ করা যায়; ফলে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে এই টিকা পৌঁছানো তুলনামূলক সহজ।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মডার্নার টিকা মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়, যা সাধারণ রেফ্রিজারেটরে সম্ভব নয়।

প্রত্যেকের জন্য অক্সফোর্ডের টিকার দুটো করে ডোজ নিতে হবে। দুই ডোজের মধ্যে ২৮ দিনের ব্যবধান থাকবে। এসআইআইয়ের কোভিশিল্ড ভারতের সরকারের কাছে প্রতি ডোজ প্রায় ২৫০ রুপি ও বাজারে এক হাজার রুপি দরে বিক্রি করা হবে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।