তামিল নাডুতে পিতা-পুত্রের মৃত্যু: পুলিশ হেফাজতে ‘৭ ঘণ্টা পেটানো হয়েছিল’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় দেওয়া লকডাউন অমান্য করার অভিযোগে  তামিল নাডুতে গ্রেপ্তারের পর মারা যাওয়া দুই ব্যক্তিকে পুলিশ হেফাজতে ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পেটানো হয়েছিল বলে এ সংক্রান্ত এক অভিযোগপত্রে জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2020, 11:39 AM
Updated : 27 Oct 2020, 11:39 AM

পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হয় ‘সে সম্বন্ধে শিক্ষা দিতেই’ ওই দুইজনকে ব্যাপক মারধর করা হয়, বলা হয়েছে সিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে।

৫৯ বছর বয়সী জয়রাজ এবং তার ৩১ বছর বয়সী ছেলে বেনিকসকে এত নির্মমভাবে পেটানো হয়েছিল যে তাদের রক্ত ছিটকে সানথানকুলাম থানার দেয়ালে গিয়েও লাগে বলে তদন্তকারীরা প্রমাণ পেয়েছেন, জানিয়েছে এনডিটিভি। 

কারফিউ শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট পরও মোবাইলের দোকান খোলা রাখার অভিযোগে চলতি বছরের ১৯ জুন তামিল নাডু পুলিশ জয়রাজকে গ্রেপ্তার করেছিল। বেনিকস থানায় গেলে পরে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

এ দুজনকে রাত পৌনে ৮টা থেকে শুরু করে রাত তিনটা পর্যন্ত সামন্য বিরতি দিয়ে দিয়ে ‘কয়েক দফা বর্বরভাবে পেটানো হয়’ বলে সিবিআইয়ের অভিযোগেপত্রে বলা হয়েছে।

বেনিকসকে এমনকী তার পোশাক দিয়েই মেঝেতে পড়ে থাকা রক্ত মুছতে বাধ্যও করা হয়েছিল।

নিজেদের অপরাধকে আড়াল করতে পুলিশ পরে জয়রাজ ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছিল বলে জানিয়েছে সিবিআই। এ দুজন লকডাউনের নির্দেশনা অমান্য করেননি বলেও তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

মারধরের পরদিন পিতা-পুত্রের পোশাক দুই দফা বদলে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। জয়রাজ ও বেনিকসের কাপড়চোপড় তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর না করে একটি সরকারি হাসপাতালের বর্জ্যের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয় বলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে।

গ্রেপ্তারের পর তামিল নাডুর এ পিতা-পুত্রকে নির্দয়ভাবে পেটাতে পুলিশ সদস্যরা লাঠি ব্যবহার করেছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে সিবিআই।

ভারতের এ কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো জানিয়েছে, জয়রাজ ও বেনিকসকে মারধর ও নির্যাতন করতে পরিদর্শক এস শ্রীধর অন্য পুলিশ সদস্যদের প্ররোচিত করেছিলেন। 

“যখনই পুলিশ সদস্যরা বিরতি নিত, শ্রীধর তখন সবকিছু চুপচাপ কেন জানতে চাইতেন এবং আরেক দফা পেটানোর জন্য প্ররোচিত করতেন। জয়রাজ ও বেনিকসের কাপড়চোপড় খুলে ফেলা হয়েছিল। অন্তর্বাস পরা অবস্থায় তাদেরকে টেবিলের উপর ফেলে রেখে পেটানো হয়েছিল; পেটানোর সময় তাদের হাত-পা ধরে রাখা হতো,” বলা হয়েছে তাদের অভিযোগপত্রে।

নির্যাতনের শিকার পিতা-পুত্র দুজনই ২২ জুন কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মারা যান।