ভারত সরকারের কাছে পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর কোনো তথ্য নেই

ভারতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেওয়া কঠোর লকডাউনের সময় বাড়ি ফিরতে চাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই, ফলে ‘ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও প্রশ্নই ওঠে না’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ কুমার গাঙ্গোয়ার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2020, 09:50 AM
Updated : 15 Sept 2020, 09:50 AM

মৃত পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কিনা, সোমবার লোকসভায় এমন এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে তিনি এ কথা বলেছেন।

আনন্দবাজার জানিয়েছে, পার্লামেন্টের বর্ষা অধিবেশনের শুরুর দিন পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে সরকারের এমন অবস্থানে বিরোধীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বিজেপি নেতৃত্বধীন ক্ষমতাসীন জোটের অনেক শরিক দলও মন্ত্রীর জবাবে বিস্মিত হয়েছে ।

মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্য দিতে না পারলেও লকডাউনের সময় এক কোটিরও বেশি শ্রমিক দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নিজ নিজ রাজ্যে ফিরেছেন বলে স্বীকার করে নিয়েছে ভারতের শ্রম মন্ত্রণালয় ।

করোনাভাইরাস মহামারী প্রতিরোধে ভারতজুড়ে দেওয়া লকডাউনের সময় বাড়ি ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকের হিসাব আছে কিনা, লকডাউন-পরবর্তী লোকসভার প্রথম অধিবেশনে শ্রম মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়।

বাড়ি ফেরার পথে যে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার অবগত কিনা তার বিস্তারিত জানতে চাওয়ার পাশাপাশি নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ কিংবা কোনো ধরনের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন করেছিলেন লোকসভার সদস্যরা।

এসব প্রশ্নের লিখিত উত্তরে ভারতের কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ বলেন, “এ ধরনের কোনো তথ্য রাখা হয়নি। এজন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও প্রশ্ন ওঠে না।”

মন্ত্রীর এমন জবাবের কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে কংগ্রেস।

দলটির সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী মঙ্গলবার সকালে টুইটারে হিন্দি ভাষায় লেখা এক পোস্টে বলেছেন, “নরেন্দ্র মোদী সরকার জানেই না লকডাউনে কতজন পরিযায়ী শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন, কতজন কাজ হারিয়েছেন। আপনি গণনা করেননি বলে কেউ মারা যাননি? এটা খুবই দুঃখজনক যে এ বিষয়টি সরকারের কাছে গুরুত্বই পায়নি। সারা বিশ্ব তাদের মৃত্যু দেখেছে। আর এদিকে মোদী সরকার, তাদের কাছে কোনো তথ্যই নেই।”

কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং বলেছেন,“মাঝে মাঝে আমার মনে হয় হয় আমরা অন্ধ, আর না হয় সরকার মনে করছে যা ইচ্ছা তাই করা যায়।”

পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সরকারের ‘চরম ঔদাসীন্য’ মনোভাবের সমালোচনা করেছেন কেরালার অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাকও।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মার্চে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতজুড়ে কঠোর লকডাউন দেওয়ার কয়েকদিন পর থেকেই চাকরি ও আশ্রয় হারা লাখ লাখ শ্রমিককে পায়ে হেঁটে কিংবা সাইকেলে বাড়ির পথ ধরতে দেখা যায়।

লকডাউনের কারণে রাতারাতি বেকার হয়ে পড়া এ শ্রমিকরা দিনের পর দিন ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত অবস্থায় হেঁটেছেন; বাড়ি পৌঁছানোর আগেই এদের অনেকের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার ঘটনা সেসময় ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামও হয়েছে।