চীনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ ভারতের, বাড়ছে উত্তেজনা

লাদাখ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই এবার সামনে এল অরুণাচল। চীনের বিরুদ্ধে অরুণাচল প্রদেশ থেকে ৫ ভারতীয়কে অপহরণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুই দেশের উত্তেজনার পারদ আরও চড়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2020, 03:11 PM
Updated : 7 Sept 2020, 03:11 PM

বিবিসি জানায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রথম এক টুইটে চীনের বিরুদ্ধে অপহরণের এই অভিযোগ করেন ভারতের অরুণাচল প্রদেশের এক বিধায়ক।

এরপর ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক সদস্য বলেছেন, চীনের সামরিক বাহিনীর কাছে হটলাইনে বার্তা পাঠানো হয়েছে। তবে এই ঘটনার ব্যাপারে ‘বিস্তারিত কিছু জানানোর নেই’ বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

চীনা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেছেন, বেইজিং কখনও তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি, এ অঞ্চল দক্ষিণ তিব্বত অঞ্চলে। তিনি বলেন, “ওই অঞ্চলে ৫ ভারতীয় নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে পিএলএ-কে বার্তা পাঠিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী যে প্রশ্ন করেছে  সে সম্পর্কে এখনও আমাদের বিস্তারিত কিছু জানানোর নেই।”

ওই ৫ ভারতীয় শিকার করতে গিয়ে অপহৃত হয়েছেন বলে শনিবার খবর প্রকাশ করেছে ‘দ্য অরুণাচল টাইমস’ পত্রিকা। তারা কখন নিখোঁজ হয়েছিলেন সেটিও তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার জানা যায়নি।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল হর্ষবর্ধন পান্ডে রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, “আমরা তাদের (চীন) সঙ্গে হটলাইনে কথা বলেছি। তাদেরকে বলেছি যে, কিছু মানুষ আপনাদের ওইদিকে চলে গেছে। তাদেরকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব। যেমনটি আমরা সাধারণত করে থাকি।”

“জঙ্গল এবং পর্বতময় ওই অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট কোনও সীমারেখা নেই। সুতরাং মানুষ ওইপাশে চলে গিয়ে থাকতে পারে। এটি খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।”

তবে চীন তাদের কথার কোনও উত্তর এখনও দেয়নি বলে জানান তিনি। সংবাদমাধ্যমগুলোও এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য চীনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও উত্তর পায়নি।

অরুণাচলের বিধায়ক তাপির গাও গত ৩ সেপ্টেম্বরে সীমান্তের কাছ থেকে ভারতীয় অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছিলেন। তবে এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

ভারতীয় অপহরণের বিষয়ে এক সাংবাদিক ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চীনের সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে বার্তা পাওয়ার অপেক্ষায় আছে ভারতের সেনাবাহিনী।

লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে চীন এবং ভারত একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকার মধ্যেই অপহরণের এই অভিযোগ উঠল।

অগাস্টে এক সপ্তাহের মধ্যে চীনা সেনাবাহিনী দু'দফা সীমান্তে সামরিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ ভারতের। চীন এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

গত ৫ সেপ্টেম্বর মস্কোয় চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেখানেও অচলাবস্থা নিরসনের পরিবর্তে দুইজনের মধ্যে কথার লড়াই শুরু হয়।

বৈঠকের পর চীন বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ভারতের ভুলের কারণে সীমান্তে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বেইজিং তার ভূমির এক ইঞ্চিও ছাড় দেবে না।

ওদিকে, ভারত অভিযোগ করে বলেছে, চীন সীমান্তে ব্যাপকহারে সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। তারা আগ্রাসী আচরণ করে একতরফাভাবে স্থিতাবস্থা নষ্ট করছে।