কোভিড-১৯: একদিনে রেকর্ড ৯০ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত ভারতে

ভারতে একদিনে রেকর্ড ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষের দেহে প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Sept 2020, 09:26 AM
Updated : 6 Sept 2020, 09:26 AM

মহামারীর মধ্যে এর আগে কখনোই কোনো দেশে ২৪ ঘণ্টায় এত বেশি কোভিড-১৯ রোগী পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কয়েকদিন আগেও ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের রেকর্ড ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটিতে জুলাইয়ের মাঝামাঝি একদিনে ৭৭ হাজার ২৯৯ জনের দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছিল।

একদিনে ৭৮ হাজারের বেশি শনাক্ত রোগী নিয়ে গত সপ্তাহেই ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ওই রেকর্ড ভেঙে ছিল।

ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে শনাক্ত রোগীর তালিকায় নতুন করে ৯০ হাজার ৬৩২ জন যুক্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ লাখ অতিক্রম করেছে। তবে এদের মধ্যে ৩২ লাখ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

একই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনাভাইরাসে এক হাজার ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে তারা। সব মিলিয়ে ভারতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৭০ হাজার ৬২৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

যে হারে রোগী শনাক্ত হচ্ছে, তাতে সরকারি হিসাবে সোমবারের মধ্যেই কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যায় ভারত ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তেমনটা হলে ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই দ্বিতীয় স্থানে উঠে যাবে বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্যাশবোর্ড অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে রোববার সকাল পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৬২ লাখ ৫০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে; দেশটিতে করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজারের বেশি। ব্রাজিলে শনাক্ত রোগী ৪১ লাখ ২৩ হাজার , মৃত্যু ছাড়িয়েছে এক লাখ ২৬ হাজার।

ইন্ডিয়া টুডে টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নয়া দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের পরিচালক রণদীপ গুলেরিয়া বলেছেন, ভাইরাস বড় বড় শহরগুলো থেকে দেশের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ায় এ বছর যে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সমাপ্তি হচ্ছে না, তা একপ্রকার নিশ্চিত।

সংক্রমণ রেখা সমতল হওয়ার আগ পর্যন্ত ভারতে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা এভাবেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা তার।

দেশটির কিছু অঞ্চল সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ দেখছে বলে ধারণা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এর পাশাপাশি পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো এবং জনসাধারণের চলাচলের উপর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায়ও সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে বলে অনুমান তাদের।

ভারতে গত প্রায় এক মাস ধরে প্রতিদিনই বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হচ্ছে; এর মধ্যেই দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার অর্থনীতি ফের সচলে বিধিনিষেধ শিথিলের পথে হাঁটছে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার থেকে রাজধানী নয়া দিল্লির একাংশে মেট্রো রেল চলাচলও শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।