এমন পরিস্থিতিতে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একটি শহর হাজির হয়েছে ‘অনবদ্য’ এক সমাধান নিয়ে।
বুদগাম জেলার দুধপাত্রি শহরের একদল শিক্ষার্থী এখন পাহাড়ের উপর উন্মুক্ত প্রান্তরকেই নতুন শ্রেণিকক্ষ বানিয়ে নিয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
খোলা আকাশের নিচে এ পাঠ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে কয়েক মাস ধরে চার দেয়ালের ভেতর আটকে থাকা অভিভাবকদেরও প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কাশ্মীরে এরই মধ্যে ১৯ হাজারের বেশি মানুষের দেহে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৬৫ জনের।
পাহাড়ি এলাকা হিসেবে কাশ্মীরের দুধপাত্রি এমনিতেই পর্যটকদের পছন্দের স্থান। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে চলতি গ্রীষ্মে পর্যটকদের দেখা মেলেনি। স্থানীয়রা তাই পর্যটন কেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থানগুলোকে আপাতত অন্য কাজে ব্যবহারে কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছেন।
বিবিসি বলছে, লকডাউনের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন স্কুল অনলাইনে পাঠদানের চেষ্টা করলেও দুর্গম এলাকায় দ্রুতগতির ইন্টারনেটের অভাব, সরকারি স্কুলে তহবিল ঘাটতি এবং অনেক শিক্ষার্থীর স্মার্টফোন না থাকার কারণে বিকল্প এ পদ্ধতি কার্যকর হয়ে উঠছে না। এমনকী বেসরকারি স্কুলগুলোতেও এটি শ্রেণি বিভাজন উসকে দিচ্ছে। কারও কারও কাছে একাধিক স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও আইপ্যাড আছে; আবার কারও একটিও নেই।
সে কারণেই কাশ্মীরের দুধপাত্রির এ খোলা আকাশের নিচে স্কুলের ধারণাকে অনেকেই স্বাগত জানাচ্ছেন।
মহামারীর আগে থেকেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া অনেক শিক্ষার্থীদের জন্যও নতুন এ ‘ওপেন এয়ার স্কুল’ সহায়ক হয়েছে বলে অনুমান কর্মকর্তাদের।
গত বছরের অগাস্টে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধানে কাশ্মীরকে দেওয়া বিশেষ মর্যাদা বাতিল করলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ এলাকার সঙ্গে দিল্লির টানাপোড়েন আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সাম্প্রতিক সময়ে উপত্যকাটিতে অস্থিরতাও আগের তুলনায় বেশ বেড়েছে।
পাহাড়ের উপর উন্মুক্ত প্রান্তরের এসব স্কুলে কেবল একটাই অসুবিধা, বৃষ্টি। মাথার উপর মেঘ দেখা গেলেই শিশুরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। কখনো কখনো বৃষ্টির অঝোর ধারার শব্দও তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে হারিয়ে যায়।