ইরানে গাড়িতে ‘আগুন লেগে ৩ আফগান শরণার্থীর মৃত্যু’

ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় ইয়াজদ প্রদেশে আফগানিস্তানের শরণার্থীদের বহনকারী একটি গাড়িতে আগুন লেগে তিন জন নিহত ও আরও চার জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2020, 03:18 PM
Updated : 6 June 2020, 03:18 PM

ইরানি পুলিশের গুলিতে গাড়িটিতে আগুন ধরে যায় বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে শরীরের অনেক অংশ পুড়ে যাওয়া এক বালককে জ্বলন্ত ওই গাড়িটি থেকে বের হয়ে আসতে ও পানির জন্য কাকুতি-মিনতি করতে দেখা গেছে।

ভিডিওটিকে আসল বলে দাবি করে ইরানে থাকা আফগানরা হতাহতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

কয়েক সপ্তাহ আগে আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছিলেন, ইরানি সীমান্ত রক্ষীরা একদল আফগান শরণার্থীকে নদীতে ডুবিয়ে মেরেছে।

ওই অভিযোগের পর এবারের ঘটনায় আফগান নাগরিকদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইরানি পুলিশের নিন্দা করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ওই বালকের কাকুতির ভিডিও ‘আমাকে একটু পানি দিন, আমি জ্বলছি’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিওটি সামনে এনে এ ঘটনার বিচার দাবি করেছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।

আলী নুরি নামের একজন আইনজীবী ও মানবাধিকার আন্দোলনকারী ফেইসবুকে লিখেছেন, “আফগান শরণার্থীদের হত্যা করার কোনো অধিকার ইরানের নেই। তারা তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিতে পারে, সব আফগানকে বহিষ্কার করতে পারে কিন্তু তাদের হত্যা করতে পারে না।” 

তাদের নিজ দেশে যুদ্ধ চলায় ও দারিদ্রের কারণে কয়েক দশক ধরে আফগানরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইরানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।

ইরান জানিয়েছে, তাদের এখানে বৈধ ও অবৈধ মিলে প্রায় ২৫ লাখ আফগান অভিবাসী বসবাস করছে।

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান নিজেই অর্থনৈতিক সঙ্কটে আছে। এ পরিস্থিতিতে তারা বেশ কয়েকবার আফগান শরণার্থীদের তাদের নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে।

গত মাসে আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছিলেন, ইরানি সীমান্তরক্ষীরা বন্দুকের মুখে একদল আফগান অভিবাসী শ্রমিককে সীমান্তের একটি খরস্রোতা নদী সাঁতরে পার হতে বাধ্য করার সময় ৪৫ জন ডুবে মারা যান। 

ওই সময় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাভি এক বিবৃতি দিয়ে, ঘটনাটি আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে ঘটেছে বলে দাবি করেন।

সর্বশেষ ঘটনাটির বিষয়ে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের ইরানি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মন্তব্য জানার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কাউকে পাওয়া যায়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।